নতুন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে ঝাড়গ্রামের লোকশিল্পীরা। নিজস্ব চিত্র।
প্রথম মহিলা জনজাতির রাষ্ট্রপতি পেল দেশ। আর দ্রৌপদী মুর্মুর শপথ গ্রহণ উপলক্ষে রাজধানীর বুকে অনুষ্ঠান করলেন জঙ্গলমহলের লোকশিল্পীরা।
কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীন পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের মাধ্যমে নয়াদিল্লি গিয়েছেন শিবানী হেমব্রম, ফুলমণি মুর্মু, পার্বতী বাস্কের মতো ঝাড়গ্রামের ১৫ জন লোকশিল্পী। রবিবার উমাশঙ্কর দীক্ষিত রোডের বাংলোয় দ্রৌপদী মুর্মুকে আদিবাসী প্রথায় নৃত্যের মাধ্যমে অভ্যর্থনা জানান তাঁরা। তাঁদের সঙ্গে গ্রুপ ফোটোও তোলেন দ্রৌপদী। আপ্লুত শিবানীরা বলছেন, ‘‘শপথ গ্রহণের আগের দিনই নতুন রাষ্ট্রপতি আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন, ছবি তুলেছেন, আমাদের নাচ দেখেছেন। এটা শিল্পীজীবনের সেরা পাওয়া।’’
ঝাড়গ্রামের ঝুমুর শিল্পী ইন্দ্রাণী মাহাতো জানান, ওই অনুষ্ঠানে তাঁর দলের আমন্ত্রণ ছিল। কিন্তু অন্য কর্মসূচি থাকায় তিনি ও তাঁর সহশিল্পীরা যেতে পারেননি। তবে ইন্দ্রাণী ঝাড়গ্রাম শহরের একটি আদিবাসী সাংস্কৃতিক দলের লোকশিল্পীদের সঙ্গে পূর্বাঞ্চল সংস্কৃতি কেন্দ্রের আধিকারিকদের যোগাযোগ করিয়ে দেন। ওই দলের সঙ্গে ইন্দ্রাণীর মাদলশিল্পী তুফানচন্দ্র মাহাতোও গিয়েছেন। হাওড়া থেকে রাজধানী এক্সপ্রেসে শুক্রবার রওনা দেয় দলটি। শনিবার নয়াদিল্লি পৌঁছলে হরিনগরপুরে এক অতিথিশালায় তাঁদের থাকার ব্যবস্থা হয়। রবিবার বিকেলে দ্রৌপদীর উপস্থিতিতে আদিবাসী লোকসংস্কৃতির অনুষ্ঠান করে দলটি। সেখানে বিভিন্ন রাজ্যের আদিবাসী সাংস্কৃতিক দলগুলিকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
সোমবার শপথ গ্রহণের সময় অনুষ্ঠান করার কথা থাকলেও সেটা অবশ্য হয়নি। তবে এ দিন দুপুরে নয়াদিল্লির ন্যাশনাল ট্রাইব্যাল রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বহু গণ্যমান্য ব্যক্তিত্বের উপস্থিতিতে দ্রৌপদীর সম্মানে আদিবাসী নৃত্য পরিবেশন করেন ঝাড়গ্রামের লোকশিল্পীরা। সেখানে অবশ্য নতুন রাষ্ট্রপতি ছিলেন না। ১৫ জনের ওই দলে রয়েছেন ৯ জন মহিলা শিল্পী। ঝাড়গ্রামের আদিবাসী সাংস্কৃতিক দলের প্রবীণ শিল্পী মণীন্দ্র মুর্মু বলেন, ‘‘এমন সুযোগ মিলবে কখনও ভাবিনি। আমাদের সম্প্রদায়ের একজন মহিলা রাষ্ট্রপতি হয়েছেন। তাঁর সম্মানে আমরা আমন্ত্রিত হতে পেরে গর্বিত।’’ মাদল শিল্পী তুফানেরও বক্তব্য, ‘‘ভীষণই ভাল লাগছে।’’
এই ভাললাগার স্মৃতি নিয়েই আজ, মঙ্গলবার বিকেলে হাওড়াগামী ট্রেন ধরছেন ঝাড়গ্রামের শিল্পীরা।