মৃত ব্যবসায়ী সমীর পড়িয়া। —ফাইল চিত্র।
কোলাঘাটে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের ঘটনায় এক দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুলিশ। ধৃতের নাম শেখ ইসাক। তাঁর বাড়ি হাওড়ার শ্যামপুর থানা এলাকায়। সোমবার ইসাককে তমলুক আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে ১২ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে চার দুষ্কৃতী জড়িত বলে জানা গিয়েছে। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি জারি রয়েছে।
গত ২১ নভেম্বর, মঙ্গলবার কোলাঘাটের দেউড়িবাড় এলাকায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে বাড়ি ফেরার পথে হামলার মুখে পড়েন উত্তর জিঞাদার বাসিন্দা সমীর পড়িয়া। পেশায় স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমীরের মাথায় গুলি চালিয়ে তাঁর ব্যাগ থেকে প্রচুর গয়না এবং নগদ টাকা লুট হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকা। প্রশ্ন ওঠে পুলিশি নিরাপত্তার। খুন এবং ছিনতাইয়ের ঘটনার পর অবশ্য এলাকায় পুলিশি নজরদারি বাড়ানো হয়। তদন্তের এক সপ্তাহের মধ্যে অবশেষে পুলিশের জালে ধরা পড়ল এক দুষ্কৃতী।
পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ঘটনার দিন অভিযুক্তেরা আগে থেকেই জাতীয় সড়কের ধারে অপেক্ষায় ছিল। সমীর দোকান বন্ধ করে মোটর বাইকে ঘটনাস্থলে পৌঁছনো মাত্রই তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায় তারা। ব্যবসায়ীর ব্যাগ ছিনতাই করতে গেলে তিনি বাধা দেন। সেই সময় পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে সমীরের মাথায় এবং মুখে গুলি করা হয়। তদন্তকারীরা মনে করছেন। ছিনতাই হয়েছে পূর্ব পরিকল্পনামাফিক। তবে খুনও সেই ‘ছকের’ মধ্যে ছিল কি না, তা তদন্তসাপেক্ষ।
খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের খোঁজ চলে বিভিন্ন এলাকায়। এর মধ্যে ধৃত ইসাককে পাওয়া যায় মহিষাদলের কাপাসএড়িয়ায়। তমলুকের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক সাকিব আহমেদ বলেন, ‘‘কোলাঘাটের ঘটনায় শেক ইসাক নামের এক দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হাওড়ার শ্যামপুর থানা এলাকায় তাঁর বাড়ি। এই ঘটনায় আর কারা জড়িত, চুরি করা মালপত্র কোথায়, তা জানতে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’’
ওই গ্রেফতারি প্রসঙ্গে মৃত ব্যবসায়ীর আত্মীয় নারায়ণ নায়েক বলেন, ‘‘পাঁশকুড়া থেকে কোলাঘাটের মধ্যবর্তী জাতীয় সড়ক তো রাতে দুষ্কৃতীদের আখড়া হয়ে ওঠে। রাস্তার বাতিস্তম্ভ লাগানো, সিসি ক্যামেরা-সহ পুলিশের নজরদারির দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আমাদের আন্দোলন চলছে। শুধুমাত্র পুলিশি নজরদারির অভাবেই দুষ্কৃতীরা সমীরকে খুন করে নিশ্চিন্তে লুটপাট চালিয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছে। এদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি আমরা।’’