লক্ষ্যে-অবিচল: কিংশুক ঘোষ
দু’ পায়ে ভর দিয়ে হাঁটতে পারে না এক ইঞ্চি। লিখতেও পারে না ঠিকমত। তবু মাধ্যমিকে সফল হওয়ার লক্ষ্যে অবিচল কিংশুক ঘোষ। আর মহিষাদলের ওই প্রতিবন্ধী কিশোরের লক্ষ্যপূরণে মানবিক হল মধ্য শিক্ষা পর্ষদ। বাড়ির কাছের কেন্দ্রে ওই ছাত্রের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে তারা।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মহিষাদলের গয়েশ্বরীর বাসিন্দা কৌশিক স্নায়ুর রোগে আক্রান্ত। পরিবার সূত্রের খবর ১০০ শতাংশ প্রতিবন্ধী কৌশিক ঠিক মত দাঁড়াতে বা লিখতে পারে না। কৌশিক রাজ হাইস্কুলে পড়ে। এবার ওই স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের মাধ্যমিক পরীক্ষার ‘সিট’ পড়েছে গেঁওখালি হাইস্কুল। ওই কেন্দ্রটি কৌশিকের বাড়ি থেকে কমপক্ষে সাত কিলোমিটার দূরে। হাঁটতে চলতে অক্ষম কৌশিকের পরীক্ষা কেন্দ্রে যেতে অসুবিধে হবে বলে তার পরিজনেরা আশঙ্কা করেছিলেন। তাঁরা বিষয়টি রাজ হাইস্কুল কর্তৃপক্ষকে জানান।
রাজ হাইস্কুলের তরফে এ ব্যাপারে মধ্য শিক্ষা পর্ষদকে চিঠি দিয়ে জানানো হয়। এর পরেই পর্ষদের তরফে কৌশিকের পরীক্ষা কেন্দ্র বদল করে তার বাড়ির পাশে গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলে করা হয়। সেই স্কুলে বসেই মঙ্গলবার বাংলা এবং বুধবার ইংরাজি পরীক্ষা দিয়েছে কিংশুক। পেশায় ঠিকাদার কৌশিকের বাবা রণজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘আমার ছেলে আশৈশব স্নায়ুর অসুখে ভুগছে। স্কুলের সহযোগিতায় এত দূর এগিয়েছে ও। পরীক্ষাকেন্দ্র নিয়ে চিন্তা ছিল। তবে শিক্ষা পর্ষদ সেই চিন্তা দূর করে দিয়েছে।’’
মহিষাদলের গয়েশ্বরী গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পারমিতা গিরি বলেন, ‘‘নীচের তলার একটি ঘরে কৌশিকের পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাছাড়া ওই পরীক্ষার্থীর যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া রয়েছে।’’ মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পদক্ষেপে খুশি কৌশিকও। তার কথায়, ‘‘মা-বাবার ভালবাসাকে পাথেয় করে পড়াশুনো চালিয়ে যাই। তবে স্কুলের শিক্ষকরা যেভাবে আমার পাশে থাকেন, তাতেও লড়াই করার রসদ পাই।’’