প্রতীকী ছবি।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। এমন আবহে এবার জঙ্গলমহলের জেলা ঝাড়গ্রামে আশাকর্মী নিয়োগের ইন্টারভিউ হবে সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে। নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটিতে এবার কোনও জনপ্রতিনিধিকেও রাখা হয়নি। রয়েছেন কেবল প্রশাসনিক আধিকারিকরা।
দিন কয়েক হল ঝাড়গ্রাম জেলায় আশাকর্মীর ৪০টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য প্রশাসনিক বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এই জেলায় আশাকর্মীর অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০৩১টি। এই মুহূর্তে জেলায় আশাকর্মীর সংখ্যা ৯১৯ জন। আরও ১১১টি শূন্যপদের মধ্যে গত বছর ৭১ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। গত বছর ওই নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটিতে ছিলেন বিধায়ক ও শাসকদলের এক নেত্রী। এবার অবশ্য রাজ্য থেকে গড়ে দেওয়া জেলা স্তরের নিয়োগ কমিটিতে কোনও জনপ্রতিনিধি অথবা শাসকদলের নেতা-নেত্রীকে রাখা হয়নি। কিছুদিন আগে নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটিতে জনপ্রতিনিধিরা কেন থাকবেন, সেই প্রশ্ন তুলেছিল হাইকোর্ট। সূত্রের খবর, সেই কারণেই সম্ভবত এবার নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটিতে কোনও জনপ্রতিনিধিকে না রাখার সিদ্ধান্ত। জানা গিয়েছে, এবার আশাকর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির চেয়ারম্যান হলেন জেলাশাসক, মহকুমাশাসক সদস্য সচিব এবং সদস্য হিসেবে রয়েছেন আইসিডিএস প্রকল্পের জেলা আধিকারিক, জেলা জনস্বাস্থ্য আধিকারিক ও সংশ্লিষ্ট ব্লকের স্বাস্থ্য আধিকারিক।
জানা গিয়েছে, মোট ৪০টি শূন্যপদের মধ্যে লালগড় ব্লকে ৫ টি, বেলপাহাড়ি ব্লকে ৮ টি, গোপীবল্লভপুর-১ ব্লকে ৪ টি, গোপীবল্লভপুর-২ ব্লকে ৩ টি, জামবনি ব্লকে ৪ টি, ঝাড়গ্রাম ব্লকে ৭ টি, নয়াগ্রাম ব্লকে ৫ টি ও সাঁকরাইল ব্লকে ৪ টি শূন্য পদ রয়েছে। মাধ্যমিক উত্তীর্ণ অথবা অনুত্তীর্ণ মহিলারা সেই পদে আবেদন করতে পারবেন। শুক্রবার ১৩ জানুয়ারি থেকে ৩১ জানুয়ারি ছুটির দিন বাদে সংশ্লিষ্ট ব্লক অফিসে (বিডিও) আবেদনপত্র জমা দেওয়া যাবে। সেই আবেদনপত্র ডাউনলোড করা যাবে জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইট থেকে। এখনও ইন্টারভিউয়ের চূড়ান্ত দিনক্ষণ ঠিক হয়নি। তবে এবার সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে ইন্টারভিউ নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, অনেক সময় নিয়োগের পর অকৃতকার্য প্রার্থীরা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। সেই কারণেই এবার সিসি ক্যামেরার নজরদারিতে ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। জমা পড়া আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে কর্মপ্রার্থীদের ইন্টারভিউতে ডাকা হবে। জেলার আশা কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত কমিটির সদস্য সচিব তথা মহকুমাশাসক (ঝাড়গ্রাম সদর) বাবুলাল মাহাতো বলেন, ‘‘স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার নজরদারিতে আশাকর্মীদের ইন্টারভিউ নেওয়া হবে। আবেদনপত্র খতিয়ে দেখে শীঘ্রই দিনক্ষণ চূড়ান্ত করা হবে।’’
পশ্চিমবঙ্গ আশাকর্মী ইউনিয়নের জেলা সম্পাদক জ্যোৎস্না মাইতি বলছেন, ‘‘আমি ২০০৯ সালে কাজে যোগ দিই। কাউকে টাকা দিয়ে আমায় কাজ পেতে হয়নি। এখন অবশ্য নানা কথা শুনতে পাই। প্রশাসন ক্যামেরায় নজরদারি করে ইন্টারভিউ নিলে কে-কি রকম উত্তর বলছেন সেটা রেকর্ড থাকবে এটা খুব ভাল উদ্যোগ। এতে নিয়োগে স্বচ্ছতা থাকবে।’’