মৃত: হাতির দেহ সরানোর চেষ্টা চলছে। নিজস্ব চিত্র
শিশু-হাতি রেল লাইন পেরিয়ে চলে যাচ্ছিল অন্য দিকে। মা-হাতি তাকে সোজা রাস্তায় আনার চেষ্টা করছিল। বিপদ হল সেখানেই। শাবকটি ফের লাইন পেরিয়ে সোজা রাস্তা ধরলেও মাকে ধাক্কা মারল মেদিনীপুর-পুরুলিয়া প্যাসেঞ্জার (ভায়া টাটা)। মহাসপ্তমীর ভোরে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খেমাশুলি ও সর্ডিহা স্টেশনের মাঝে এই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় পূর্ণবয়স্ক মাদি হাতিটির। তবে, বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেয়েছেন ট্রেনের যাত্রীরা। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, ‘‘কুয়াশার কারণেই এত বড় দুর্ঘটনা ঘটল। তবে মারাত্মক বিপদ থেকে রক্ষা পেয়েছেন ট্রেন যাত্রীরা।’’
রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর সওয়া ৪টে নাগাদ প্যাসেঞ্জার ট্রেনটি খড়্গপুরের খেমাশুলি ছেড়ে সর্ডিহার দিকে যাচ্ছিল। হাতিটি রেল লাইন পেরিয়ে যাচ্ছিল গুপ্তমণির দিকে। কুয়াশায় ট্রেনের চালক প্রথমে হাতিটিকে দেখতে পাননি। পরে দুর্ঘটনা এড়াতে আপৎকালীন ব্রেক কষলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ট্রেনের ধাক্কায় হাতিটি প্রায় ২০ ফুট ঘষে গিয়ে ছিটকে পড়ে একটি বিদ্যুৎবাহী খুঁটিতে। হুড়মুড়িয়ে আপ-লাইনের উপর ভেঙে পড়ে বিদ্যুৎবাহী খুঁটিটি। তবে ততক্ষণে যাত্রিবাহী ট্রেনটি কিছুদূর এগিয়ে গিয়েছে। ফলে, এড়ানো গিয়েছে বড় দুর্ঘটনা। এর পরেই ৭ টা ৫৪ মিনিট পর্যন্ত খড়গপুর-ঝাড়গ্রাম-টাটা শাখায় ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন বহু যাত্রী।
বন দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বৃহস্পতিবার রাতে খড়্গপুর বন বিভাগের কলাইকুণ্ডা রেঞ্জ এলাকার জটিয়া-নিশ্চিন্তার জঙ্গল থেকে প্রায় ৮০টি হাতির পাল ঝাড়গ্রাম বন বিভাগের মানিকপাড়া রেঞ্জ এলাকার কুমারী ও রামরামার জঙ্গলে চলে আসে। দলে রয়েছে প্রায় ২০টি শাবক। গত পাঁচ দিনে হাতির হানায় সাড়ে তিনশো বিঘে জমির ধান ও আনাজ চাষের ক্ষতি হয়েছে।