প্রাণ বাঁচাল ঐরাবত যান। — ফাইল চিত্র।
ঠিক সন্ধ্যা নামার আগেই ঘটে যাচ্ছিল দুর্ঘটনা।
এক মহিলা-সহ দু’জন হাতির দলের সামনে পড়েছিলেন। হঠাৎ মাঝে ঢুকল ‘ঐরাবত’ (হাতি খেদানোর যন্ত্র গাড়ি)। জীবন্ত ঐরাবতের রোষ থেকে বাঁচতে পারল না যন্ত্র ‘ঐরাবত’। তবে বন দফতর সূত্রের খবর, যন্ত্র ‘ঐরাবতে’র কাচ ভাঙলেও এ যাত্রায় প্রাণ বাঁচল দু’জনের। বৃহস্পতিবার চাঁদড়ার আমঝর্নার এই ঘটনায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচল বন দফতরও।
বন দফতর সূত্রের খবর, দিন কয়েক ধরে হাতির দল ছিল খড়্গপুর গ্রামীণ এলাকায়। বুধবার রাতে সেই দল চলে আসে মেদিনীপুর গ্রামীণ এলাকায়। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে বন দফতর চাঁদড়া এলাকার আমঝর্নায় পাঠিয়েছিল হাতি খেদানোর যন্ত্র গাড়ি ঐরাবত। জনবসতিপূর্ণ এলাকায় হাতি রয়েছে তাই বাড়তি সতর্ক ছিল বন দফতর। এ দিন সন্ধ্যা নামার ঠিক আগেই খেল দেখায় ঐরাবত। চাঁদড়ার রেঞ্জার সুজিত পণ্ডা বলেন, ‘‘ওই গাড়ির কাচ ভেঙেছে। আর কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’’ গাড়িতে চালক সহ দুই বনকর্মী ছিলেন। স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘ওই গাড়ি না থাকলে আজ আরও দু’জনকে পিষে দিত হাতি।’’
বন দফতর সূত্রের খবর, সাধারণত যন্ত্র ‘ঐরাবত’ জীবন্ত ঐরাবতের মুখোমুখি হয় না। অর্থাৎ ইচ্ছাকৃত ভাবেই যন্ত্র গাড়িকে হাতির দলের সামনে নিয়ে যাওয়া হয় না। কিন্তু এ দিন এলাকায় থাকা ওই যন্ত্রগাড়ির চালক ও বনকর্মী দু’জনের প্রাণ বাঁচাতেই গাড়ি হাতির দলের সামনে নিয়ে গিয়েছিলেন। কারণ, ওই গাড়িটি এমন ভাবে তৈরি যাতে তার মধ্যে থাকা কারওই কোনও অবস্থাতেই হাতির আক্রমণে বিশেষ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না।
বন দফতর সূত্রে খবর, মেদিনীপুর বন বিভাগের অধীন এলাকায় এখন ৯০ থেকে ৯৫টি হাতি রয়েছে। চাঁদড়া রেঞ্জের গোলকচকে রয়েছে ৮টি হাতি, ভাদুলিয়া এবং শুকনাখালির আশেপাশে রয়েছে ৬৫টি হাতি, শিরষিতে রয়েছে ২২টি হাতি। ‘জঙ্গলে যাবেন না, সতর্ক থাকবেন’- এই মর্মে স্থানীয়দের সতর্ক করে বন দফতর। তবু ঘটে যায় দুর্ঘটনা। কখনও মানুষের অসতর্কতায়। কখনও হাতির দলের খামখেয়ালি মনোভাবে।
জঙ্গল এলাকার পাশে যাঁদের বাস গজগমন তাঁদের কাছে মূর্তিমান বিপদের আরেক নাম। বনকর্মীরাও ডরান হাতিদের মতিগতিকে। কারণ, ‘সে-যে চমকে বেড়ায় দৃষ্টি এড়ায়, যায় না তারে বাঁধা/ সে-যে নাগাল পেলে পালায় ঠেলে, লাগায় চোখে ধাঁদা।’