কম ভোল্টেজের জেরে আলো জ্বলে টিমটিম করে। পাখাও যেন চলে দুলকি চালে। গরমে নাভিশ্বাস ওঠে বাসিন্দাদের। জলের পাম্প চালানো দূর অস্ত। এই পরিস্থিতিতে দীর্ঘ দিন ধরে ক্ষোভ জমছিলই। এ বার বিদ্যুতের কম ভোল্টেজের সমস্যা মেটাতে তড়িঘড়ি লালগড়ে নতুন সাবস্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নিল বিদ্যুত্ দফতর। জেলা পরিষদের বিদ্যুত্ কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, “এটা সত্যি যে লো ভোল্টেজের কারণে লালগড়ে খুব সমস্যা হচ্ছে। তাই এ বার লালগড়ে একটি নতুন ৩৩ কেভি সাবস্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
চলতি আর্থিক বছরেই নতুন সাবস্টেশন তৈরি করা হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন অমূল্যবাবু। কিন্তু এই প্রখর গ্রীষ্মে কী হবে? বাড়িতে বিদ্যুত্ থাকা সত্ত্বেও কী গরমে হাঁসফাস করতে হবে জঙ্গলমহলের এই মানুষগুলিকে? অমূল্যবাবুর অবশ্য দাবি, “না, কষ্ট পেতে হবে না। যতদিন না নতুন সাবস্টেশন হচ্ছে ততদিন অস্থায়ীভাবে ঝাড়গ্রাম থেকে একটি সংযোগ দেওয়া হবে। যাতে লো ভোল্টেজ কমে যায়।”
লালগড়ে বিদ্যতের লো ভোল্টেজের সমস্যা দীর্ঘদিনের। এই সমস্যা মেটাতে শালবনি ব্লকের ভীমপুর বা ঝাড়গ্রাম সাব স্টেশন থেকে সংযোগ দেওয়ার কথা এর আগে ভাবাও হয়েছিল। কিন্তু তা কার্যকরী হয়নি। বিদ্যুত্ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই সিদ্ধান্ত কার্যকরী করলেও খুব একটা সুবিধে হত না। কারণ, লালগড় থেকে ভীমপুর বা ঝাড়গ্রাম সাব স্টেশনের দূরত্ব এতটাই বেশি যে, তার থেকে লালগড়ে সাব স্টেশন তৈরি অনেক ভালো। দীর্ঘদিন ধরে লালগড়ের বিদ্যুত্ পরিস্থিতি নিয়ে দাবি আসার কারণে সম্প্রতি লালগড় পরিদর্শনে যান বিদ্যুত্ কর্মাধ্যক্ষ। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভও দেখান। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, একে সাবস্টেশন নেই, তার উপর অবাধে হুকিং চলছে। ফলে লো ভোল্টেজ সমস্যা বেড়েই চলেছে। সব শোনার পরেই নতুন সাবস্টেশন তৈরির সিদ্ধান্ত নেন কর্মাধ্যক্ষ। যতদিন না সাব স্টেশন তৈরি হচ্ছে ততদিন লো ভোল্টেজ কমাতে অস্থায়ীভাবে ঝাড়গ্রাম থেকে বিদ্যুত্ সংযোগ দিয়ে লো ভোল্টেজ কমানো হবে বলেও তাঁর দাবি। লালগড়ে সাব স্টেশন তৈরির সিদ্ধান্তে খুশি এলাকাবাসী। তাঁদের দাবি, দ্রুত প্রকল্প রূপায়ণে উদ্যোগী হোক প্রশাসন। যাতে চলতি বছর থেকেই লো ভোল্টেজের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।