সিদ্ধার্থ দাস। —নিজস্ব চিত্র।
খড়ের ছাউনির এক চিলতে মাটির বাড়ি। রেডিও ছাড়া বিনোদনের কোনও ব্যবস্থা নেই। আসে না খবরের কাগজ। এক বিঘা জমিতে যে চাষ হয় তাতে দু’বেলা খাবার জোটে।
এই সব প্রতিকূলতা জয় করেই মাধ্যমিকে ৬৪৮ নম্বর পেয়েছে পিংলার করকাই গ্রামের সিদ্ধার্থ দাস। করকাই বিবেকানন্দ ইনস্টিটিউশনের এই ছাত্র নিজের স্কুলে সেরা। সে আইএএস অফিসার হতে চায়। তবে মা চান ছেলে ডাক্তার হোক। এখন বিজ্ঞান নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়াই লক্ষ্য। কিন্তু ছেলের উচ্চ শিক্ষার খরচ কোত্থেকে আসবে, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় সিদ্ধার্থের বাবা সজলকান্ত দাস। সজলবাবুর কথায়, “ছেলে যখন এত সফল হয়েছে তখন নিজে না খেয়েও ওকে মানুষ করব।’’
বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর সজলবাবু বেকার। স্ত্রী উমাদেবী সংসার সামলানোর ফাঁকে ছেলেকে পড়িয়েছেন। বাবার কাছে বিজ্ঞান ও মায়ের কাছে বাকি বিষয় পড়ত সিদ্ধার্থ। মাধ্যমিকের আগে সিদ্ধার্থ যখন সবংয়ের শ্রীরামপুরে মামাবাড়িতে থাকত তখন স্থানীয় যুবক তাপস জানার কাছে ইংরাজি পড়েছে। সিদ্ধার্থর প্রাপ্ত নম্বর বাংলায় ৯২, ইংরাজিতে ৯০, অঙ্কে ৯৬, ভৌতবিজ্ঞানে ১০০, জীবনবিজ্ঞানে ৯৬, ইতিহাসে ৯০ ও ভুগোলে ৮৪।
বরাবর ক্লাসে প্রথম হওয়া সিদ্ধার্থ প্রবন্ধ প্রতিযোগিতাতেও সফল হয়েছে। বাড়িতে টিভি নেই। তাই রেডিও সিদ্ধার্থের সঙ্গী। আর সকালে বাড়ির কাছে দোকানে গিয়ে খবরের কাগজ পড়া ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য লিখে রাখার অভ্যাস রয়েছে। সিদ্ধার্থর কথায়, “ভাল ফলের জন্য বাবা-মা, স্কুলের শিক্ষক ও তাপসদার অবদান যথেষ্ট। ভবিষ্যতে যাতে ওঁদের সকলের মুখ উজ্জ্বল করতে পারি সেই চেষ্টা করব।’’