ভিড় নেই বইমেলায়। নিজস্ব চিত্র
মেলায় ভিড়ের কমতি নেই। কিন্তু তার প্রতিফলন মিলছে না বই বিক্রিতে। স্পষ্টতই হতাশ মেলায় ষ্টল দেওয়া বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা। সপ্তাহব্যাপী পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বইমেলার চারদিন কেটে গেলেও বই বিক্রি তেমন আশানুরূপ নয় বলে দাবি মেলার বিভিন্ন স্টলমালিকের
কাঁথি শহরের অরবিন্দ স্টেডিয়ামে গত ২৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে ১৮ তম জেলা বইমেলা। আগামী বৃহস্পতিবার শেষ হচ্ছে মেলা। তার আগে জেলা বইমেলা প্রাঙ্গণে কলকাতার নামী প্রকাশনা সংস্থাগুলির পাশাপাশি জেলার বই বিক্রেতাদের কথায় ফুটে উঠল এক রাশ হতাশা। অনেকেরই কথায়, ‘‘এত খরচ করে মেলায় স্টল দেওয়ার ব্যবসা যদি ভাল না হয় তা বলে মেলায় এসে লাভ কী!’’
উদ্বোধনের দিন থেকেই অবশ্য বইমেলায় কমতি নেই ভিড়ের শুক্র থেকে রবি, তিনদিন জমজমাট ছিল বই মেলা চত্বর। তবে বই বিক্রি সে ভাবে হয়নি বলে দাবি প্রকাশনা সংস্থাগুলির। যদিও মেলার উদ্যোক্তাদের দাবি, বই বিক্রি হচ্ছে তার নিজের ঢঙে। বইপ্রেমীরা ঠিকই বই কিনছেন। আনন্দ পাবলিশার্স, উডপিকার, পারুল, কলেজ স্ট্রিট বুক পাবলিশার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের মতো নামী প্রকাশনা সংস্থা মেলায় স্টল দিয়েছে। আনন্দ পাবলিশার্স-এর স্টলের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি জানালেন, “বইমেলার সঙ্গে সম্পর্কটাই অন্যরকম। তাই আসি। এ বার এখনও পর্যন্ত বিক্রি আশানুরূপ হয়নি। তবে এখনও কয়েকদিন মেলা রয়েছে। আশা করছি বই বিক্রি বাড়বে।’’
তবে মেলায় আসা নবীন প্রজন্মের মধ্যে বই কেনার আগ্রহ সে ভাবে দেখা যাচ্ছে না বলে জানান একাধিক বই বিক্রেতা। তাঁদের মতে, এর অন্যতম প্রধান কারণ ছাত্রছাত্রীদের মোবাইলে ফোনের প্রতি অতিরিক্ত নির্ভরতা। কোনও বিষয়বস্তুর গভীরে যাওয়ার মানসিকতাই এখনকার ছেলেমেয়েদের মধ্যে সেভাবে দেখা যায় না। এটা তারই প্রতিফলন।
বই মেলা কখনও মিস করেন না এমনই একজন কাঁথি প্রভাত কুমার কলেজের সমাজবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক। বললেন, ‘‘প্রতিবার বইমেলা থেকে নানা ধরনের বই কিনি। বিভিন্ন ধরনের বই পড়তে ভাল লাগে। এ বারই প্রায় চার হাজার টাকার বই কিনেছি।’’
তবে বইয়ের দোকানে ভিড় না খাকলেও মেলায় পিঠেপুলির স্টলে ভাল ভিড় দেখা গেল। স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা জানান, মেলায় যারাই আসছেন একবার অন্তত এখান ছুঁয়ে স্বাদ নিয়ে যাচ্ছেন। মেলা কমিটির সদস্য ও জেলা পরিষদের শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ মধুরিমা মণ্ডল বলেন, ‘‘দু’দিন মেলায় গিয়েছিলাম। বই বিক্রি ভালই হচ্ছে দেখেছি। যাঁরা বই কেনার তাঁরা ঠিকই কিনছেন।’’