Durga Puja 2021

বাজারে পৌঁছনই দায়, নদীতে পদ্ম ফেলে দিচ্ছেন পাঁশকুড়ার চাষিরা

ইয়াসের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেননি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, তমলুক-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার পদ্মচাষিরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২১ ১৫:১৩
Share:

বাজারে পদ্ম নিয়ে যেতে বিপাকে পড়েছে চাষিরা। নিজস্ব চিত্র

ইয়াসের ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেননি পূর্ব মেদিনীপুরের পদ্মচাষিরা। আগের মতো নিয়ম করে লোকাল ট্রেন না চলাও তার সঙ্গে যোগ হয়েছে। এই জোড়া কাঁটায় বিদ্ধ পূর্ব মেদিনীপুরের পদ্মচাষিরা। পরিস্থিতি এমন চললে দুর্গাপুজোর সময় পদ্মফুলের বাজারে আগুন লাগতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

Advertisement

গত মে মাসের শেষলগ্নে রাজ্যে হানা দিয়েছিল ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। তার পর বেশ কয়েক মাস কেটে গেলেও, তার ধাক্কা এখনও সামলে উঠতে পারেননি পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া, কোলাঘাট, তমলুক-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার পদ্মচাষিরা। সেখানকার পদ্মফুল কলকাতা-সহ রাজ্যের একটি বড় অংশের চাহিদা মেটায়। ওই পদ্মফুল মূলত নিয়ে যাওয়া হত লোকাল ট্রেনে। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে গত বছর থেকেই লোকাল ট্রেন নিয়মিত চলাচল বন্ধ।

পদ্ম চাষ করে এখন বিপাকে পূর্ব মেদিনীপুরের বহু কৃষক। পাঁশকুড়ার পদ্মচাষি হারাধন অধিকারী যেমন বললেন, ‘‘ইয়াসে পদ্মের পাতা নষ্ট হয়ে চাষের চরম ক্ষতি করেছে। যার জেরে উৎপাদন খুবই কম।’’ প্রাকৃতিক দুর্যোগের ধাক্কা সামলে তবুও ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। কিন্তু গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে উঠেছে আগের মতো নিয়ম করে লোকাল ট্রেন না চলা। হারাধন যেমন বলে দিলেন, ‘‘ট্রেন চলাচল অনিয়মিত। বিশেষ যে ট্রেন চলছে তাতে পদ্মফুলের মতো জিনিসপত্র নিয়ে যাওয়া যায় না। হাওড়া স্টেশনেও সমস্যায় পড়তে হয়। এর ফলে যতটা ফুল উৎপাদন হচ্ছে তা কলকাতায় নিয়ে যেতেও চূড়ান্ত সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’’ এর ফলে দুর্গাপুজোয় পদ্মফুলের চাহিদা তুঙ্গে উঠবে বলেই দাবি তাঁর।

Advertisement

পুজোয় পদ্মের দাম বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা। নিজস্ব চিত্র

আরও পড়ুন:

পাঁশকুড়ারই আর এক পদ্মচাষি ব্রজবিহারী দাস যেমন বলছেন, ‘‘পদ্ম চাষ করা হয় চৈত্র থেকে। তা চলে দুর্গাপুজো পর্যন্ত। এই ফুল সংরক্ষণ করলেও তা ১৫ দিনের বেশি টেকে না। এখন মাত্র ২ টাকা করে যে পদ্ম বিকোচ্ছে তা পুজোর মুখে পাওয়াই মুশকিল হবে। বাজার থেকে চড়া সুদে টাকা নিয়ে পদ্মচাষ করে আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছি।’’ ফুল বাজারে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশেষ ট্রেন চালু করার দাবিও করেছেন ব্রজবিহারী। তাঁর আশঙ্কা, ‘‘না হলে পুজোর সময় বাজারে পদ্মের অভাব ব্যাপক আকার নিতে পারে।’’

হারাধন আরও বলছেন, ‘‘শ্রাবণ মাসে অবাঙালিদের পুজো থাকে। সেই সময় ফুল কলকাতায় নিয়ে গেলে তবেই বাজার পাওয়া যায়। কিন্তু গত বছরের পাশাপাশি এ বছরও দীর্ঘ দিন ধরে লোকাল ট্রেন নিয়মিত চলছে না। সড়ক পথে কলকাতায় যেতে গেলে ৫ হাজার টাকা ভাড়া গুনতে হয়। উপযুক্ত দাম না পেয়ে নদীতে ফুল ফেলে আসতে হচ্ছে। এর খেসারত দিতে হবে দুর্গাপুজোয়।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement