টিকাকরণের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখছেন স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা। বুধবার কেরানিতলায়। নিজস্ব চিত্র।
করোনা টিকাকরণের (কোভিড ভ্যাকসিনেশন) ড্রাই-রান শুরু হতে চলেছে পশ্চিম মেদিনীপুরেও। সব ঠিকঠাক থাকলে কাল, শুক্রবার হবে ড্রাই-রান। ইতিমধ্যে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘জেলায় করোনা টিকাকরণের ড্রাই-রান হবে। এ জন্য যে পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীও বলেন, ‘‘করোনা টিকাকরণের ড্রাই-রানের বন্দোবস্ত করা হচ্ছে জেলায়। প্রয়োজনীয় রুটম্যাপ সাজানো হয়েছে।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর— কাল, শুক্রবার একই সঙ্গে মেদিনীপুরের তিনটি এলাকায় ড্রাই-রান হবে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে, শরৎপল্লির পুর-প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং কেরানিতলার পরিবারকল্যাণ সমিতির কেন্দ্রে। যেখানে ড্রাই-রান হবে, সেখানকার পরিকাঠামো বুধবারই খতিয়ে দেখা হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবারও ওই কেন্দ্রগুলিতে যেতে পারে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের একটি দল। ড্রাই-রানের গোটা প্রক্রিয়াটা যাতে সুষ্ঠু ভাবে হয় এবং কোথাও কোনও ফাঁক যাতে না থাকে তা দেখার জন্যই কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করতে পারে দলটি। করোনা টিকাকরণের জন্য নূন্যতম তিনটি ঘর প্রয়োজন। একটি ‘ওয়েটিং রুম’ হিসেবে থাকবে, একটি ‘অবজারভেশন রুম’ হিসেবে থাকবে এবং আরেকটি থাকবে ‘ভ্যাকসিনেশন রুম’। টিকা নেওয়ার পরে গ্রহীতাকে নিয়ে যাওয়া হবে ‘অবজারভেশন রুম’-এ। সেখানে শারীরিক পরিস্থিতি দেখে পরে তাঁকে টিকাকরণ কেন্দ্র থেকে ছাড়া হবে। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর বলেন, ‘‘সমস্ত কিছুই নিয়ম মেনে করা হবে।’’
জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, টিকা এলে এবং তা দেওয়ার সময়ে কী কী চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে— তা আগাম বুঝে নিতেই ড্রাই-রান। এ ক্ষেত্রে শুধু আসল টিকা দেওয়া হয় না, বাকি সবটাই নিয়ম মেনে ধাপে ধাপে করা হয়। জানা যাচ্ছে, ওই তিনটি কেন্দ্রের প্রতিটিতে ২৫ জন করে স্বেচ্ছাসেবক ড্রাই-রানে অংশ নেবেন। এঁদের নামের তালিকা তৈরি হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রেই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মী থাকবেন। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, ‘‘টিকাকরণের কাজ চালাতে গিয়ে কোথাও কোনও অসুবিধার মধ্যে পড়তে হচ্ছে কি না, টিকাকরণের গতি বাড়াতে গেলে আর কী কী পদক্ষেপ করা প্রয়োজন, সে সম্পর্কে সম্যক ধারণা গড়ে ওঠে ড্রাই-রানে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, ‘‘প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মীরা টিকাকরণের কাজ করবেন। ড্রাই-রানেও তাঁরা থাকছেন।’’ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে টিকার বিতরণ ও সংরক্ষণের সব তথ্য রেকর্ড করা থাকবে।
চলতি মাসেই জেলায় করোনার ভ্যাকসিন পৌঁছনোর কথা রয়েছে। তার আগেই টিকাকরণের ড্রাই-রান সেরে ফেলা হচ্ছে। জেলার অন্য এক স্বাস্থ্য আধিকারিকও বলেন, ‘‘কী ভাবে টিকা দেওয়া হবে, টিকা দেবেন যাঁরা, তাঁদের সে বিষয়ে জ্ঞান কতটা, যদি কারও কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় বা কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েন, তা হলে চটজলদি কী ব্যবস্থা নিতে হবে, সে সবেরও মহড়া সেরে ফেলা হবে।’’ যেখানে এই ড্রাই রান প্রক্রিয়া চলবে, সেখানে যাঁরা এই টিকা নেবেন তাঁদের ঢোকা-বেরনোর জন্য আলাদা জায়গা থাকবে। বুধবার টিকাকরণ কেন্দ্রের পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার ফাঁকে জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘টিকাকরণের ড্রাই রানের প্রস্তুতি পুরোদমেই চলছে। যেখানে যে পদক্ষেপ করার করা হয়েছে।’’