সাগরে নোঙর করে থাকা এমভি লেক ডি। নিজস্ব চিত্র
অস্ট্রেলিয়া থেকে স্টিম কয়লা আনা বৃহত্তম ‘ড্রাই কার্গো’ জাহাজ নোঙর করল হলদিয়া বন্দর থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে। বন্দর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, ক্যাপ সাইজের এতবড় মালবাহী জাহাজ কলকাতা বন্দরের ইতিহাসে আগে কখনও নোঙর করেনি। সেখান থেকেই জাহাজের পণ্য খালাস করা হয়েছে।
বন্দর সূত্রের খবর, সাধারণ ক্যাপ সাইজের জাহাজগুলি ৩০০ মিটার বা তার বেশি লম্বা হয় (এক লক্ষ ৫৬ হাজার ডেড ওয়েট টনেজ)। বিশাল আকারের জন্য এই জাহাজ জাহাজ পানামা খাল বা সুয়েজ ক্যানালের মধ্যেও যাতায়াত করতে পারে না। দানবাকৃতির এই জাহাজই এখন বঙ্গোপসাগরের ‘সাগর চ্যানেল’ নামক অংশে নোঙর ফেলেছে। বুধবার হলদিয়া বন্দরে ডেপুটি ম্যানেজার, অমলকুমার মেহেরা বলেন, ‘‘কলকাতা বন্দরের ইতিহাসে এত বড় জাহাজ নোঙর করেনি। সাগরে ওই জাহাজটি পণ্য খালাস করছে। অস্ট্রেলিয়া থেকে স্টিম কয়লা আনা হয়েছিল সেটিতে। এবার হলদিয়া বন্দর হয়ে ওই কয়লা যাবে নেপালে।’’
বন্দর সূত্রের খবর, এমভি লেক ডি নামে এই ক্যাপ সাইজের জাহাজটির পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা দেড় লাখ টন। প্রথমে কিছু পণ্য বিশাখাপত্তনমে খালাস করে ৬৬ হাজার মেট্রিক টন কয়লা এনেছে। বন্দর আধিকারিকেরা জানান, বঙ্গোপসাগরের স্যান্ডহেডে (হলদিয়া বন্দর থেকে দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার) এপ্রিল থেকে মে মাসে পণ্য খালাস করা যায় না। কারণ, সমুদ্র উত্তাল থাকে। স্যান্ডহেডের গভীরতা ৫০ মিটারের বেশি। সাগর চ্যানেলে গভীরতা ১০ মিটারের কাছাকাছি আর হলদিয়া বন্দরে আট মিটার। সাগরে ক্যাপ সাইজের জাহাজের পুরো পণ্য খালাস করতে অসুবিধা হয় না। গত আর্থিক বছরে সাতটি ছোট ক্যাপ সাইজের জাহাজ স্যান্ডহেডে নোঙর করেছিল। সেখান থেকেই একাধিক জাহাজে পণ্য আনা হয় হলদিয়া বন্দরে। তবে এবারে জাহাজটি সেগুলির থেকে বহুগুণে বড়। আর এবার স্যান্ডহেডের বদলে জাহাজকে নোঙর করানো হয়েছে সাগর চ্যানালে।
মে থেকে সেপ্টেম্বরের আগে পর্যন্ত ধরা হয় ঝড় ও ঝঞ্ঝার সময়। এই সময় সমুদ্র উত্তাল থাকে। স্যান্ডহেডেও কার্যত পণ্য খালাস বন্ধ থাকে। এই সময় এত বড় জাহাজের পণ্য নিয়ে আসা এবং খালাস করাকে সাফল্য হিসাবে দেখছেন বন্দর কর্তারা। বন্দর কর্তৃপক্ষ এ দিন জাহাজের ক্যাপ্টেন ও কর্মীদের সংবর্ধনাও দিয়েছেন।