এগরার চিঠি

নিকাশির নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি চায় শহর

দীর্ঘদিন হল পুরসভা হয়েছে এগরা। কিন্তু আজও শহরের সর্বত্র পাকা নিকাশি নালা গড়ে ওঠেনি। এতদিনে শহরের সার্বিক নিকাশি পরিকাঠামো ঢেলে সাজার কোনও পরিকল্পনাও করা হয়নি। তাছাড়া নালাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। আবর্জনা- প্লাস্টিকে অবরুদ্ধ নালা থেকে ছড়ায় দূষণও। একভাবে নোংরা জল জমে থাকায় নর্দমাগুলিতে বিভিন্ন রোগের জীবাণুর প্রাদুর্ভাব।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৫ ০০:৩৭
Share:

জবরদখলে অবরুদ্ধ নিকাশি নালা

Advertisement

নিকাশি নালার উপরই গজিয়ে উঠেছে দোকান ঘর।

দীর্ঘদিন হল পুরসভা হয়েছে এগরা। কিন্তু আজও শহরের সর্বত্র পাকা নিকাশি নালা গড়ে ওঠেনি। এতদিনে শহরের সার্বিক নিকাশি পরিকাঠামো ঢেলে সাজার কোনও পরিকল্পনাও করা হয়নি। তাছাড়া নালাগুলি নিয়মিত পরিষ্কার করা হয় না। আবর্জনা- প্লাস্টিকে অবরুদ্ধ নালা থেকে ছড়ায় দূষণও। একভাবে নোংরা জল জমে থাকায় নর্দমাগুলিতে বিভিন্ন রোগের জীবাণুর প্রাদুর্ভাব। কিছু জায়গায় নালা তৈরি করা হলেও সেগুলির কাজ পরিকল্পনামাফিক হয়নি। ফলে জল বয়ে না গিয়ে নালাতেই জমে থাকে। তাছাড়া জবরদখলকারীদের দাপটে নালা পরিষ্কার করাও দুষ্কর। বর্ষাকালে অবস্থা আরও দুর্বিষহ হয়ে ওঠে। আগের তুলনায় বর্তমান পুরসভা নিকাশি ব্যবস্থার মানোন্নয়নে কিছুটা উদ্যোগী হয়েছে ঠিকই। তবে প্রয়োজনের তুলনায় তা পর্যাপ্ত নয়। শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজার আবেদন জানাচ্ছি। নিকাশি নালাগুলি নিয়মিত সংস্কার করা হলে বর্ষাকালে নরক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পাবে শহরবাসী।

Advertisement

অমিতাভ জানা (আকলাবাদ), (সহজ তথ্যমিত্র কেন্দ্রের পরিচালক)

শহরে স্থায়ী সংস্কৃতি কেন্দ্র চাই

চলছে নাটকের মহড়া।

হারাতে বসেছে শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। শহরে কোনও সংস্কৃতি কেন্দ্র নেই। নেই আধুনিক প্রেক্ষাগৃহও। তার মধ্যেও অতি কষ্টে এগরার ‘কৃষ্টিচক্র’ নাটকের জগতে নিজেদের সুনাম অক্ষুন্ন রেখেছে। সমস্যায় আবৃত্তি ও অঙ্কন চর্চায় ‘কথাছন্দ’, নাচে ‘আশাবরী’, ‘বহ্নিশিখা’, সঙ্গীতে ‘প্রাচীন সঙ্গীত সংসদ’-এর মতো সংস্থাও। শহরে চিত্রকলা প্রদর্শনীর স্থায়ী কেন্দ্রও নেই। এ জন্য অঙ্কন প্রতিযোগিতায় শিশু শিল্পীদের আঁকা সুন্দর ছবিও সকলকে দেখানো যায় না। প্রেক্ষাগৃহ না থাকায় প্যান্ডেল করে যে কোনও অনুষ্ঠানের বন্দোবস্ত করতে হয়। শ্মশান কালী মন্দিরের কাছে এগরা-১ পঞ্চায়েত সমিতির একটি হল থাকলেও সেটি বর্তমানে একমাত্র পুলিশই ব্যবহার করে। সবসময় প্যান্ডেল করে অনুষ্ঠান করার বিপুল খরচ বহন করাও সকলের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে শহরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সংখ্যা কমছে।

জ্যোতির্ময় চক্রবর্তী (কসবা), চিত্রকর।

নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন

আঁধার নামলেই রূপ বদলে যায় শহরের। রাতে এগরা শহরের মূল বাসস্ট্যান্ডগুলির পাশের বেশ কিছু দোকানে অবাধে বিক্রি হয় বিভিন্ন নেশার দ্রব্য। সব জেনেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করে পুলিশ। ফলে স্কুলের ছোট ছোট ছেলেরাও নেশার কবলে পড়ছে। অবিলম্বে এগরা শহরে নেশাদ্রব্যের বিক্রি ও সেবনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা দরকার। একইসঙ্গে বাড়ছে শহরে অসামাজিক ব্যক্তিদের আনাগোনাও। আমার মনে হয়, শহরে অপরাধের মাত্রা কমাতে পুলিশকে আরও সক্রিয় হতে হবে। টহলদারি আরও বাড়ানো প্রয়োজন। শহরের বাসিন্দারা যাতে নিশ্চিতে শহরের সর্বত্র ঘুরে বেড়াতে পারে, সে জন্য পুরসভা আরও উদ্যোগী হোক। একজন মেয়ে হিসেবে আমি উপলব্ধি করতে পারি, রাতের শহর সম্পূর্ণ নিরাপদ নয়। নারী নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে শহরে মদ্যপ যুবকদের গতিবিধির উপর নজরদারি
বাড়ানো প্রয়োজন।

অনুপমা পয়ড়্যা (জগন্নাথপুর), কলেজ ছাত্রী।

যানজটে পথ চলা দায়

যানজটের এই ছবি নিত্যদিনের।

এই শহরেই ছোট থেকে বড় হওয়া। এগরা একটি ছোট শহর। কিন্তু এই শহরের মধ্য দিয়েই বিভিন্ন রাজ্য সড়ক গিয়েছে। ফলে প্রতিদিন কােজর উদ্দেশে বিভিন্ন মানুষ শহরে আসেন। কিন্তু হকারদের দাপটে দিনে-দিনে কমছে রাস্তার পরিসর। ফলে যানজট লেগেই থাকে। সামান্য দূরত্ব পার হতেও দীর্ঘক্ষণ সময় লেগে যায়। শুধু গাড়িতে নয়, রাস্তা দিয়ে শান্তিতে হেঁটে যাওয়াও দুষ্কর। স্কুলের ছেলেমেয়েরাও রাস্তা পার হতে সমস্যায় পড়ে। শহরের পরিধি ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। যানজট কমাতে শহরে চারপাশে বাইপাস রাস্তা তৈরি করা হোক। এ ছাড়াও রাস্তার দু’ধার দখলমুক্ত করতেও পুরসভার উদ্যোগী হওয়া দরকার।

শ্যামসুন্দর দাস (পূর্ব কসবা), ব্যবসায়ী।

চাই ভ্রাম্যমান চিকিৎসা কেন্দ্র

এগরা শহরের দক্ষিণ প্রান্তে আমার বাড়ি। বাবা হৃদরোগী। রাতে বাবার শরীর খারাপ করলে খুব অসহায় লাগে। শহরে রাতে একটি ভ্রাম্যমান প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্র চালু হলে খুব সুবিধা হয়। হঠাৎ প্রয়োজন পড়লে বিশেষ করে রাতে তাদের যদি পাওয়া যায়, তাহলে মনে হয় শহরের অনেক বয়স্ক মানুষ উপকৃত হবেন। এখন রাতে কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ভোর হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। অনেক রোগের ক্ষেত্রে যে কোনও সময় বিপদ ঘটে যেতে পারে। তাই পুরসভার কাছে ভ্রাম্যমান স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালুরআবেদন রইল।

রতন জানা (অলুয়া), গৃহ শিক্ষক।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement