প্রতীকী ছবি।
একসঙ্গে ৪০ জন নার্স বদলি হয়ে যাওয়ার রেশ কাটেনি এখনও।
এ বার ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের পাঁচজন চিকিৎসককেও বদলির সিদ্ধান্ত নিল স্বাস্থ্য ভবন। অন্যত্র বদলি করা হবে প্যাথোলজি ও এক্সরে বিভাগের ১১ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীকেও। স্বাস্থ্য দফতরের এই নতুন নির্দেশের পরে প্যাথোলজি ও এক্স-রে বিভাগ চালু রাখা নিয়েই সংশয়ে পড়ে গিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
হাসপাতাল সুপার কুণাল মুখোপাধ্যায় বলেন, “স্বাস্থ্য ভবন থেকে একটি নির্দেশ এসেছে। ওই নির্দেশে চিকিৎসক-সহ প্যাথোলজি ও এক্স রে বিভাগের কয়েকজন কর্মীকে অন্যত্র বদলি করার কথা জানানো হয়েছে।”
গত সপ্তাহেই স্বাস্থ্য ভবন থেকে নির্দেশ পাঠিয়ে জানানো হয়, ৪০ জন নার্সকে ঘাটাল হাসপাতাল থেকে ‘রিলিজ’ করতে হবে। এই ৪০ জনের ১০ জন শালবনি সুপার স্পেশ্যালিটিতে ও ৩০ জন নয়াগ্রামের হাসপাতালে যোগ দেবেন। এর এক সপ্তাহ কাটতে না কাটতেই ফের জরুরি বিভাগের ৪ জন ও শিশু বিভাগের এক জন চিকিৎসককে তুলে নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।
শুধু চিকিৎসকই নয়, প্যাথোলজি বিভাগের ৭ জন টেকনিশিয়ান ও এক্স রে বিভাগের ৪ জন কর্মীকেও একই ভাবে অন্যত্র বদলি করা হবে।
ঘাটাল মহকুমা হাসপাতাল ও সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল মিলিয়ে মোট ৪৫০টি শয্যা রয়েছে। হাসপাতাল সূত্রের খবর, শয্যা সংখ্যার তুলনায় প্যাথোলজি ও এক্স রে বিভাগে কর্মীর সংখ্যা এমনিতেই কম। প্যাথোলজি বিভাগে টেকনিশিয়ান রয়েছেন মোট ৮ জন। তারমধ্যে ৭জনকে বদলি করার কথা জানানো হয়েছে। অন্য দিকে, এক্স রে বিভাগে ৮ জন কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে দু’জন অস্থায়ী কর্মী। তাঁদেরও কাজের চুক্তির মেয়াদ শেষের দিকে। বাকিদের মধ্যে চারজন কর্মীকে তুলে নেওয়া হবে বলে নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে।
একই ভাবে জরুরি বিভাগে ৬ জন চিকিৎসকের মধ্যে ৪ জন ও শিশু বিভাগে ২ জন চিকিৎসকের মধ্যে এক জনকে অন্যত্র বদলি করা হবে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের শীর্ষকর্তারা ঘাটাল হাসপাতালে পরিদর্শনে এসে ২৪ ঘণ্টাই প্যাথোলজি ও এক্স রে বিভাগ খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য আধিকারিকদের নির্দেশ মতো গত মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এই দু’টি বিভাগে দিনরাতের পরিষেবা চালু করেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
গত তিন মাসে ঘাটাল হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগে প্রায় ৫০ হাজার রোগীর রক্ত পরীক্ষা হয়েছে। প্রতিদিন গড়ে
দেড়শো জনের এক্স রে হয়। যদিও এতজন টেকনিশিয়ান ও কর্মীকে একসঙ্গে বদলি করলে এই দু’টি বিভাগ কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চিকিৎসক বলছিলেন, “সরকারের কর্মী ও চিকিৎসক নিয়োগ করার ক্ষমতা না থাকলে একসঙ্গে এতগুলি ‘ঠান্ডা বাড়ি’ বানিয়ে মানুষকে বোকা বানানো কি খুব জরুরি ছিল?”
হাসপাতালের সুপার কুণালবাবু অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। কিছু বলতে চাননি পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরাও।