ফাইল চিত্র।
ফের চেনা মেজাজে ফেরার চেষ্টায় দিলীপ ঘোষ। বিধানসভা ভোটের পরাজয় মেনে নিয়ে ফের যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে দিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। কর্মীদের পুরভোটে লড়াইয়ে কোমর বাঁধার পরামর্শ দিলেন। ঘরছাড়া কর্মীদের পাশে থাকার পাশাপাশি বেসুরোদের কড়া বার্তা দিলেন। সমালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রীর। রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে একাধিক কর্মসূচিতে এমনই মেজাজে দেখা গেল দিলীপকে।
এ দিন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ যান মেদিনীপুর বিধানসভার অন্তর্গত শালবনির কর্ণগড়ের একাধিক এলাকায়। কর্মীদের সঙ্গে দেখা করেন। দিলীপের দাবি, ‘‘বিজেপি প্রধান বিরোধী দল হয়েছে। কানের কাছে (তৃণমূলের) নিঃশ্বাস ফেলছে। পুরভোটকে প্রভাবিত করতে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে রাখা হচ্ছে।’’ তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘গত পঞ্চায়েত ভোটের সময়েও এমন লড়াই হয়েছিল। বিধানসভায় যেহেতু ভাল ফল করেছি, তাই এত আক্রমণ হচ্ছে।’’ পরে মেদিনীপুরে আসেন সাংসদ। শহরে সাংসদ জন-আহার কর্মসূচিতে যোগ দেন তিনি। তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি অজিত মাইতি অবশ্য দিলীপের অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, ‘‘বিজেপির নেতা-কর্মীরাই বিভিন্ন এলাকায় প্ররোচনা ছড়াচ্ছে।’’
দিলীপ এ দিন যান ঝাড়গ্রামেও। শহরে দলের জেলা কার্যালয়ে দলের বিভিন্ন মণ্ডলের সভাপতি ও জেলা নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। কেন বিধানসভা ভোটে ঝাড়গ্রামেও এমন বিপর্যয় হল তা জানতে প্রতিটি মণ্ডলের তরফে বুথ ভিত্তিক সমীক্ষা করে দ্রুত রিপোর্ট জেলায় জমা দিতে বলেন দিলীপ। যাঁরা দলে থেকে দলের বিরুদ্ধে কথা বলছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন। ঘরছাড়াদের ফেরাতে প্রশাসনের উপর চাপ বাড়াতে বলেন দিলীপ। প্রশাসন উদ্যোগী না হলে মণ্ডলের নেতাদের নিজ দায়িত্বে কর্মীদের ঘরে ফেরাতে বলেন। ঘরছাড়াদের খাওয়া ও আনুসঙ্গিক ত্রাণের জন্য দলীয় তহবিল থেকে অর্থ সাহায্যের কথা জানিয়ে দেন রাজ্য সভাপতি। এজন্য কত খরচ হচ্ছে দু’দিনের মধ্যে জেলা সভাপতিকে সেই হিসেব দিতে বলেন।
খড়্গপুর শহরের বোগদায় সাংসদ জন আহারের কর্মসূচিতে শামিল হন মেদিনীপুরের সাংসদ। দিন কয়েক আগেই শহরে এই পরিষেবা চালু হয়েছে। এতদিন তা পরিচালনা করছিলেন বিজেপির শহরের নেতারা। এ দিন কাজ কেমন হচ্ছে তা দেখতেই মূলত খড়্গপুরে আসেন দিলীপ।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াস নিয়ে প্রধামন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে চলছে বিতর্ক। সেই সম্পর্কে মেদিনীপুরে এক প্রশ্নের উত্তরে দিলীপ বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কোনও রাজ্যে গেলে তাঁর সঙ্গে কী ব্যবহার করা উচিত, সেটা তো নবীন পট্টনায়েককে দেখে শেখা উচিত।’’ দিলীপের সংযোজন, ‘‘উনি (মমতা) কী করে অপমানিত হন? মান-সম্মান বোধ আছে ওঁর? এখন প্রধানমন্ত্রীর পায়ে ধরতে চাইছেন। এক সময়ে তো কোমরে দড়ি বাঁধতে চেয়েছিলেন।’’