পাশাপাশি দিলীপ-শুভেন্দু।
বঙ্গ রাজনীতিতে এখন রূপকের ছড়াছড়ি। সোজসাপটা কথা বলে বিতর্কে জড়ানো দিলীপ ঘোষও এখন রূপকে সাবলীল। তালিকায় ‘নলেন গুড়’, ‘মোয়া’ নামে আরও দুই রূপক জুড়লেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ। তবে এর অর্থ স্পষ্ট হয়নি এখনও।
রবিবার ছুটির দিন খড়্গপুরের সেরসা স্টেডিয়ামে ছিল মেদিনীপুরের এমপি কাপ। মূলত বিজেপি সাংসদ দিলীপের উদ্যোগেই এই দিবারাত্রি ফুটবল প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। এ দিন দিলীপের উপস্থিতিতেই খেলার সূচনা হয়। সঙ্গে ছিলেন পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো। খেলার সূচনায় মাঠে নামে এগরা একাদশ বনাম কেএফসি কলাইকুণ্ডা। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রতিটি ব্লক থেকে একটি করে দল খেলায় যোগ দিয়েছিল। রাত পর্যন্ত চলা খেলায় আসেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। পাশাপাশি দেখা যায় দিলীপ ও শুভেন্দুকে।
গত কয়েকদিন ধরেই সেই শুভেন্দুর মুখে ‘ডিসেম্বর’ মাসের কথা শোনা যাচ্ছিল। শনিবার ডায়মন্ড হারবারের সভায় এ মাসেই বিজয় উৎসবের কথা বলেছেন বিরোধী দলনেতা। আবার তাঁর মুখে শোনা গিয়েছে ‘অন্য খেলা’র কথাও। তবে ময়দান এখনও স্পষ্ট নয়। তবে এ দিন নিজের এমপি কাপ শুরুর আগে দিলীপ যে ‘খেলা’র কথা জানালেন তাতে এসে গেল নলেন গুড়, মোয়াও। এ দিন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে দিলীপ বলেন, “আমরা তো আজ থেকেই খেলা শুরু করছি। ডিসেম্বর এসে গিয়েছে খেলা শুরু হয়েছে। দেখা যাক কতদূর পৌঁছয়।” এর পরে ফের দিলীপকে বলতে শোনা যায়, “ডিসেম্বরে খেলা হচ্ছে তো! আরও দেখতে পাবেন। মোয়া হবে, নলেন গুড় হবে!”
শুভেন্দু এদিন বলেন, ‘‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী মোদীজি খেলাধুলোয় সবসময় উৎসাহ দেন। তাঁর সুযোগ্য শিষ্য হিসাবে দিলীপদা সাংসদ হিসেবে এমন একটি সুন্দর এমপি কাপের আয়োজন করেছেন। আগামীদিনে এটা মহীরুহে পরিণত হবে। অন্য জন প্রতিনিধিরা যাঁরা ডুমুরের ফুল বলেন তাঁদের বলব এগুলি দেখে একটু শিখতে।’’ তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘২০২৪ সালে আমরা বলব আবকি বার ৪০০ পার। তখন একইসঙ্গে বলব আবকি বার দিলীপদা ফির একবার।’’
ভূপতিনগরে বিস্ফোরণ তৃণমূলের তিন কর্মীর মৃত্যু নিয়ে ইতিমধ্যেই তেতে রয়েছে রাজ্য রাজনীতি। শনিবার কাঁথির সভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিস্ফোরণের ঘটনাকেই ‘ডিসেম্বরের ধামাকা’ বলে ব্যাখ্যা করেছেন। পঞ্চায়েতে প্রার্থী দিতে না দিলে ‘অন্য খেলা’র প্রসঙ্গ টেনে সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। ‘খেলা’ নিয়ে সাধারণ মানুষের মনে চলছে নানা জল্পনা। এ দিন নিজের উদ্যোগে শুরু হওয়া খেলার ময়দানে যাওয়ার আগে খড়্গপুরের বোগদায় চা-চর্চায় বসেছিলেন সাংসদ দিলীপ। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপি ঘোড়া কেনাবেচায় যেতে পারে বলে ধারনা রাজনৈতিক মহলের। তবে সেই প্রশ্নে দিলীপ বলেন, “ওঁরা (তৃণমূল জন প্রতিনিধি) কী গরু-ছাগল যে কিনব। গরুর দামের চেয়েও তৃণমূলের বিধায়ক, সাংসদের কম দাম। কেউ নেবে না। এই পচা মাল নিয়ে আমরা ঠকেছি। আর নেব না।” অবশ্য এমন মন্তব্যে ২০২০ সালের ডিসেম্বরেই এই মেদিনীপুরের মাটিতেই তৃণমূলের এক নেতার বিজেপিতে গমনের কথা দিলীপকে স্মরণের পরামর্শ দিচ্ছেন তৃণমূলের নেতারা। নিজস্ব চিত্র