দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।
জঙ্গলমহলের সংস্কৃতির কথা বারে বারেই বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার বিভিন্ন কথায় বারে বারেই উঠে আসে ধামসা-মাদলের অনুসঙ্গ। তবে সাধারণত তির-ধনুকের কথা থাকে না সেখানে। এবার রবিবার কেশিয়াড়িতে এসে স্থানীয় বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ মনে করালেন, তিনি সরাসরি জঙ্গলমহলের ভূমিপুত্র। বললেন জঙ্গলমহলের সংস্কৃতি বাঁচিয়ে রাখার কথা। তবে এক্ষেত্রে তিনি জুড়ে দিলেন তির-ধনুককেও। জোর দিলেন শিকার উৎসবে। প্রসঙ্গত, শিকার উৎসব নিয়ে আদিবাসীদের সঙ্গে প্রশাসনের টানাপড়েন মাঝে মধ্যেই সামনে আসে। তবে সব কিছুর পরেও গোষ্ঠী কোন্দল অবশ্য এড়াতে পারছে না বিজেপি।
এদিন আদিবাসীদের নিয়ে তিরন্দাজি ও আদিবাসী নৃত্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির সাংসদ দিলীপ ঘোষ। দাঁতন ১ ব্লকের আলিকষার তালদায় ওই আয়োজন হয়।সেখানেই জঙ্গলমহলের সঙ্গে নিজের যোগসূত্রের কথা মনে করান দিলীপ। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি নিজের হাতে তির, ধনুক তৈরি করেছি। শিকারও করি আমরা। সেই সংস্কৃতিতে আমরা বড় হয়েছি। এটা যেন ভুলে না যাই আমরা। তাহলে আমাদের পরিচিতি চলে যাবে। মুখে জঙ্গলমহল বললেও জঙ্গলমহলের সংস্কৃতি থাকবে না।’’
দিলীপের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন কেশিয়াড়ি বিধানসভার বিধায়ক পরেশ মুর্মু। তিনি বলেন, "লোকসভা নির্বাচনের আগে আদিবাসী প্রেম দেখাতেই এমন মন্তব্য। আদিবাসীদের অসম্মান করে আদিবাসীদের নিয়ে খেলা করছে বিজেপি।"
উল্লেখ্য, দাঁতন ১ ব্লকটি কেশিয়াড়ি বিধানসভার অন্তর্গত। কেশিয়াড়ি এসটি বিধানসভা। আদিবাসী অধ্যুষিত ওই বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপির প্রভাবও রয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে সুচিন্তিত ভাবেই নিজের জঙ্গলমহল যোগ মনে করিয়ে গেলেন দিলীপ। এদিন দিলীপ ছাড়াও ছিলেন মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুদাম পণ্ডিত প্রমুখ। তবে শেষ বেলায় তাল কাটে অনুষ্ঠানের।
সাংসদ বেরিয়ে যাওয়ার সময়ে বিজেপির কেশিয়াড়ি ১ মণ্ডল সভাপতি বিশ্বজিৎ ভুঁইয়াকে গালিগালাজ করেন দলেরই কয়েকজন। ঠেলাঠলিও হতে দেখা যায়। বিজেপি কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলের একাংশকে দলে নিয়ে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। দলের নিচু তলার কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। যদিও বিজেপির পক্ষ থেকে গোষ্ঠী কোন্দলের কথা মানা হয়নি। বিশ্বজিৎ নিজে বলেন, ‘‘নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থেকে একটা ঘটনা ঘটেছে। মিটে গিয়েছে। তেমন কিছু নয়।"
এদিনের এমপি কাপ প্রতিযোগিতায় প্রায় একশো জন তিরন্দাজি ও ১৫টি নাচের দল অংশ নিয়েছিল। তাদের মধ্যে ৭ জন সফল তিরন্দাজ ও তিনটি নাচের দলকে পুরস্কার তুলে দেন সাংসদ।