চলছে প্রশিক্ষণ। —নিজস্ব চিত্র।
তমলুকের কাপাসবেড়িয়া গ্রামের যুবক সুব্রত ফদিকার। দৃষ্টিহীন সুব্রত আগে বুথে গিয়ে বার তিনেক ভোট দিয়েছেন, তবে পরিবারের অন্য কারও সাহায্য নিয়ে। এ বার নিজের ভোট নিজে দেবেন ভোট যন্ত্রে থাকা ব্রেইল ব্যালটের মাধ্যমে।
তমলুকের সাবলআড়া গ্রামের বছর ষাটের বৃদ্ধ শেখ মকসেদ দৃষ্টি হারিয়েছেন বছর দেড়েক আগে। আগে বহুবার একাই ভোট দিতে গেলেও এ বারই প্রথম দৃষ্টিহীন ভোটার হিসেবে বুথে যাবেন ভোট দিতে। দৃষ্টিহীন-সহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন এইসব ভোটারদের বুথে গিয়ে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি শেখাতে প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। সোমবার তমলুকের নিমতৌড়ি তমলুক উন্নয়ন সমিতির সভাকক্ষে তমলুক মহকুমার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা প্রতিবন্ধীদের এই শিবির হয়। সেখানে এসেছিলেন সুব্রত, মকসেদের মত কয়েক’শ দৃষ্টি প্রতিবন্ধীরা। শিবিরে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা শাসক অন্তরা আচার্য, তমলুকের মহকুমা শাসক শুভ্রজ্যোতি ঘোষ, জেলার নির্বাচন দফতরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক চয়ন সাহা ও নরেন্দ্রপুর ব্লাইন্ড বয়েজ অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ ঘোষ। প্রশিক্ষণ শিবিরে আসেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের ভোটার সচেতনতা বিষয়ক পর্যবেক্ষক বরুন ভরদ্বাজ।
এ বার বিধানসভা নির্বাচনে দৃষ্টিহীন সহ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভোটারদের বুথে ভোট দেওয়ায় সাহায্য করতে এ বার বেশকিছু পদক্ষেপ নিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নির্বাচন দফতর ও প্রশাসন। প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য জেলার প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে হুইল চেয়ার রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও প্রতিটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে একজন করে হলুদ রঙের টি-শার্ট পরা একজন বুথ সহায়ক থাকছেন। প্রতিটি ভোটযন্ত্রে ব্রেইল হরফে প্রার্থীর নাম ও ক্রমিক নম্বর থাকবে। একইভাবে প্রতিটি বুথে মূক ও বধির ভোটারদের ভোট দেওয়ায় সাহায্য করা হবে।
আর যেসব প্রতিবন্ধীরা অন্যের সাহায্য নিয়ে ভোট দেবেন তাঁরা কী ভাবে ভোট দেবেন তাও এই শিবিরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। জেলাশাসক অন্তরা আচার্য জানান, ‘‘প্রায় ১৫ হাজারের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভোটার রয়েছে। তাঁরা যাতে ভোট দিতে পারে সে জন্য এই প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি, এগরা এই চারটি মহকুমাতেই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ভোটারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’’