তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। — ফাইল চিত্র।
দূষণ নিয়ন্ত্রণে সদর্থক ভূমিকা পালন করছে না হলদিয়ার শিল্পতালুকের বেশ কিছু বড় কারখানা।কারখানা চত্বরে দূষণ নিয়ন্ত্রণের যথাযথ ব্যবস্থা-সহ গ্রিন বেল্ট তৈরিতেও তারা উদাসীন বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি কারখানার গ্রিন বেল্ট অর্থাৎ সবুজ বলয় নাকি নষ্টও হয়েছে। এর মধ্যে হলদিয়া পেট্রোকেমিক্যালস রয়েছে। গ্রিন বেল্ট আদপে হলদিয়ার ফুসফুস। তাই গোটা ঘটনায় আতস কাচের নীচে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদও।
এ সব নিয়েই হলদিয়া শিল্পতালুকের অন্তত ৫টি কারাখানার বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রীর কাছে নালিশ জমা পড়েছে বলে খবর। আর সেই অভিযোগ করেছেন তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, "হলদিয়া শিল্পতালুকের পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। দূষণ বাড়লে শিল্পের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে চলে যাবে। সবুজায়ন বাড়াতে হবে, দূষণ কমাতে শিল্প কারখানাগুলিকে এগিয়ে আসতে হবে।" তিনি মনে করিয়েছেন, এক সময়ে দূষণের কারনে হলদিয়া, আসানসোলের মতো শিল্পাঞ্চলে নতুন শিল্প স্থাপন নিষিদ্ধ করেছিল পরিবেশ মন্ত্রী জয়রাম রমেশের কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। সেই নিষেধাজ্ঞা ওঠে ২০১৩ সালে। এরপরেও বিভিন্ন শিল্প সংস্থা সবুজায়নে জোর দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। সাংসদ মানছেন, "দূষণ সংক্রান্ত বিষয়ে কয়েকটি সংস্থার ভূমিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রী ভুপিন্দর যাদবকে চিঠি দিয়েছি। কেন্দ্রীয় পরিবেশ দফতরের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, শীঘ্রই হলদিয়ায় কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিদল পাঠানো হবে।" দিব্যেন্দু আরও বলেন, "সমস্যা দূরীকরণের ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের সহযোগিতাও চেয়েছি।"
হলদিয়ার পরিবেশ সংগঠনগুলিও বিষয়টি নিয়ে সরব। পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞানমঞ্চের সুতাহাটা-হলদিয়া কেন্দ্রের সম্পাদক মনীন্দ্রনাথ গায়েনের অভিযোগ, "শিল্প সংস্থাগুলিকে দেখার দায়িত্ব দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের। হলদিয়ায় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের অফিস থাকলেও তারা কাগজে-কলমে সক্রিয়। দূষণ নিয়ন্ত্রণে থেকে গাছ কাটা, কিছুতেই সহযোগিতা পাওয়া যায় না।" বিজ্ঞানমঞ্চের দাবি, এক সময় হলদিয়ার বিভিন্ন শিল্প সংস্থা গ্রিন বেল্ট তৈরি করে বায়ু দূষণ কম করতে উদ্যোগী হত। আর এখন গ্রিন বেল্ট কার্যত আর নেই। হলদিয়া পেট্রোকেমের গ্রিন বেল্ট নষ্ট হয়েছে, চুরি হয়েছে গাছ। কিন্তু কোনও ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি।
দুষণ প্রতিরোধ, গাছ কাটা রুখতে হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদ ও শিল্প শহরের পুরসভা কোনও উদ্যোগ করছে না বলে দাবি। এমনকী সদ্য সমাপ্ত অরণ্য সপ্তাহেও গাছ লাগানো হয়নি। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের সি ই ও কোন্থম সুধীর অবশ্য বলেন, "দূষণ সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়টি
জানা নেই।"