জনসংযোগ যাত্রায় দেব। নিজস্ব চিত্র
লোকসভায় জিতেছে তিনি। দ্বিতীয়বারের জন্য সাংসদ হয়েছে। তবে ডেবরা বিধানসভায় ‘লিড’ পাননি দেব। একুশে জুলাইয়ের প্রচারে এসে নায়ক-সাংসদ নিজেও দেখে গেলেন এলাকায় দলের কোন্দল কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে।
শনিবার ডেবরার রাধামোহনপুরে জনসংযোগ যাত্রার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। একুশে জুলাইকে সামনে রেখে তৃণমূলের জেলা নেতা তথা ডেবরা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অলোক আচার্যই এই মিছিলের মুখ্য উদ্যোক্তা। তার আগে রাধামোহনপুর স্টেশনের ধারে মঞ্চ বেঁধে সভাও আয়োজন হয়। ওই কর্মসূচিতেই ছিলেন দেব। উপস্থিত ছিলেন তৃণমূলের ব্লক কোর কমিটির আহ্বায়ক বিবেক মুখোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মৌসুমী মুড়া প্রমুখ। তবে একুশের এই প্রচারে আসেননি ডেবরার বিধায়ক সেলিমা খাতুন, পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ তথা তৃণমূলের কোর কমিটির সদস্য রতন দে-সহ ব্লকের বেশ কয়েকজন নেতা। এই ঘটনাতেই ফের প্রকাশ্যে এসেছে তৃণমূলের বিভাজন।
বহু বছর ধরেই এই ব্লকে উপদলীয় দ্বন্দ্বে জেরবার তৃণমূল। এখন এলাকায় মূলত দু’টি গোষ্ঠী। এক দিকে রয়েছেন বিধায়ক সেলিমা খাতুন, তৃণমূলের ব্লক কোর কমিটির সদস্য রতন দে-রা। অন্য দিকে রয়েছেন তৃণমূলের জেলা নেতা আলোক আচার্য, দলের ব্লক কোর কমিটির আহ্বায়ক বিবেক মুখোপাধ্যায়েরা। এ বার লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের এই দ্বন্দ্বের সুফল পেয়েছে বিজেপি। ডেবরা বিধানসভায় প্রায় ৪হাজার ভোটের ‘লিড’ পেয়েছে গেরুয়া শিবির। দেব অবশ্য এখানেও এ দিন সৌজন্য বজায় রেখেছেন। মঞ্চে বলেছেন, “গত পাঁচ বছর অনেক কাজ করেছি, অনেক কাজ করতে পারিনি। যা পারিনি আগামী পাঁচ বছরে আপনাদের পাশে নিয়ে তা করব। আপনারা আমাকে জিতিয়েছেন তার জন্য ধন্যবাদ।”
এ দিকে, দলীয় কর্মসূচিতে না থাকলেও বিধায়ক সেলিমা খাতুন তার আগে ডেবরাচকে কাঠ ব্যবসায়ী সমিতির এক অনুষ্ঠানে দেবের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সেলিমা। দলের অনুষ্ঠানে গেলেন না কেন? সেলিমার দাবি, “রাধামোহনপুরে দলের ওই কর্মসূচির কথা আমার জানা নেই। কেউ হয়তো ব্যক্তিগত উদ্যোগে সাংসদকে ডেকেছিলেন।” ওই কর্মসূচিতে গরহাজির তৃণমূলের ব্লক কোর কমিটির সদস্য রতন দে-র আবার ক্ষোভ, “একজন নিজেকে সাংসদ প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে সাংসদকে ব্যক্তিগত সম্পত্তি করে তুলেছেন। কিন্তু দল তো কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়। অথচ অলোক আচার্যের স্বেচ্ছাচারিতায় কোর কমিটিতে কোনও আলোচনা না করে ওই কর্মসূচি পালন হয়েছে। আমাদের জানানো হয়নি।”
অলোক অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, “ব্লক নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করেই কর্মসূচি ঠিক হয়েছিল। আমি উদ্যোগী হলেও সকলকে ডাকা হয়েছিল। কেউ হয়তো ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেমনি।” ব্লক কোর কমিটির আহ্বায়ক বিবেক মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “জেলা সভাপতি বলার পরে কম সময়ে অনুষ্ঠান করতে হয়েছে। সবাইকে এসএমএস করা হয়েছে। কে, কেন আসেনি জানি না।”