প্রতীকী ছবি।
বিধানসভা ভোটের দিনক্ষণ ঘোষণার বহু আগেই নন্দীগ্রাম থেকে লড়ার কথা জানিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর থেকে নন্দীগ্রামে শুরু হয়েছে প্রচারের তোড়জোড়।
এমন আবহে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সহ-সভাপতি তথা নন্দীগ্রাম বিধানসভা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর শেখ সুফিয়ান জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি নন্দীগ্রামের বাইপাস সংলগ্ন একটি মাঠে তৃণমূলের প্রচার সভা হবে। ওই সভায় হাজির থাকতে পারেন দীপক অধিকারী (দেব), মিমি চক্রবর্তী, শতাব্দী রায়ের মতো তৃণমূলের একঝাঁক তারকা সাংসদ। আরেক সাংসদ মহুয়া মৈত্রেরও ওই সভায় থাকার কথা। যদিও এ ব্যাপারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র এখনও কিছু সিলমোহর দেননি।
বৃহস্পতিবার সুফিয়ান বলেন, ‘‘আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি নন্দীগ্রামে সাংসদ দেব, মিমি চক্রবর্তী, শতাব্দী রায় এবং মহুয়া মৈত্র সভা করবেন। ওই দিন দুপুর ২টোয় সভা করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’ জেলা সভাপতি সৌমেন অবশ্য বলছেন, ‘‘এখনও আমি সেরকম কিছু জানি না। দলগতভাবে আমাকে পরে জানিয়ে দেওয়া হয়।’’
সিঙ্গুর আর নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের হাত ধরে গত ২০১১ সালে রাজ্যের ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তারপর গত লোকসভা ভোটে সিঙ্গুরে পদ্ম ফুটেছে। কিন্তু, অক্ষত ছিল নন্দীগ্রাম। এবার নন্দীগ্রামের প্রাক্তন বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারী বিজেপি’তে যোগ দিয়েছেন। তারপরেই নন্দীগ্রামে ভোটে লড়বেন বলে ঘোষণা করেছেন মমতা। ইতিমধ্যে ভোটের প্রস্ততি নিয়ে একাধিকবার নন্দীগ্রামে বৈঠক করেছেন তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্মী। এবার তারকা সাংসদের প্রচারে এনে তৃণমূল জনমন জিততে চাই বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
যদিও বিজেপি’র দাবি, তৃণমূল এখন এমন নেতাদের দিয়ে প্রচার চালাতে চাইছেন, যাঁদের সঙ্গী নন্দীগ্রাম আন্দোলন বা নন্দীগ্রামবাসীর কোনও যোগসূত্রই নেই। গেরুয়া শিবিরের কটাক্ষ, আসলে জোড়াফুল শিবিরের পোড়খাওয়া প্রবীণ ও দক্ষ নেতারা তো আর সেই দলেই নেই। ফলে আনকোরাদের উপরেই ভরসা করতে হচ্ছে তাদের।
এ ব্যাপারে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়ক বলেন, ‘‘হারাধনের দশটি ছেলের মতোই তৃণমূলের দশা। নেতারা যদি দল ছেড়ে দেন, তবে নন্দীগ্রাম আন্দোলন নিয়ে যাঁরা কিছুই জানেন না, তাঁদেরকে দিয়েই তো তৃণমূল নেত্রীর সমর্থনে প্রচার চালাতে হবে। আসলে তারকা এনে শুধু নন্দীগ্রামের লোকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা।’’
বিজেপি’র কটাক্ষ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা সুফিয়ান অবশ্য দাবি করছেন, ‘‘দেব, শতাব্দী এবং মহুয়া মৈত্র নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনের সময় আমাদের সঙ্গেই ছিলেন। মিমি রাজনীতিতে নতুন হলেও দলের সাংসদ হিসেবেই নেত্রীর সমর্থনে প্রচার করবেন।’’ সুফিয়ান যাই বলুক না কেন, রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করিয়ে দিয়েচ্ছেন, সাংসদ হলেও দেব এবং মিমি চক্রবর্তীর রাজ্য রাজনীতিতে ২০১৪ সালের পরেই হাতেখড়ি। আর শতাব্দী রায় এবং মহুয়া মৈত্রকে নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলন পর্বে সে রকম দেখা যায়নি বলে অভিযোগ গেরুয়া শিবিরের।