গত বর্ষায় এমনই বিপজ্জনক ছিল ঝাঁকরা-কালিকাপুর রাস্তা
গত বর্ষায় এমনই বিপজ্জনক ছিল ঝাঁকরা-কালিকাপুর রাস্তা নেড়াদেউল থেকে ঝাঁকরা হয়ে কালিকাপুর পর্যন্ত রাস্তাটি পূর্ত দফতরের হাতে তুলে দেওয়ার প্রস্তুতি শুরু করল প্রশাসন। পূর্ত দফতর এতে রাজিও হয়েছে। এটা বাস্তবায়িত হলে লক্ষাধিক মানুষের দীর্ঘ যন্ত্রণার অবসান ঘটবে।
এই রাস্তাটি এতদিন কৃষি বিপণন দফতরের অধীনে ছিল। কিন্তু ওই দফতরে রাস্তা সংস্কারের জন্য কোনও অর্থ বরাদ্দ হয় না। ফলে, বছরের পর বছর জীর্ণ রাস্তার হাল ফেরেনি। বর্ষায় তো ফি বছর বাস চলাচল বন্ধ থাকে। তার জেরে শতাধিক গ্রামের মানুষ এবং ওই এলাকায় শহর থেকে যাঁরা স্কুলে, অফিসে কাজে যান, তাঁরাও বিপাকে পড়েন। শীত-গ্রীষ্মেও পথ চলতে হয় অনেক কষ্ট করে। এ নিয়ে ক্ষোভ ছিলই। ক্ষোভ সামলাতে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি থেকে বিভিন্ন দফতর কিছু কিছু টাকা দিয়ে মোরাম-বোল্ডার ফেলে গর্ত বোজানোর কাজ করেছে কয়েক বার। কিন্তু স্থায়ী সংস্কারের কাজ হয়নি। এ বার তাই পূর্ত দফতরকে রাস্তাটির দায়িত্ব নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলেন প্রশাসন। পূর্ত দফতর প্রথমে রাজি ছিল না। পরে অবশ্য বুঝিয়ে তাদের সম্মতি আদায় করা গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ বলেন, ‘‘ওই রাস্তা সংস্কার নিয়ে ফি বছর সমস্যা হয়। তাই অনেক অনুরোধের পর পূর্ত দফতর এ বার তা নিতে রাজি হয়েছে। আমরা যাবতীয় নথিও পাঠিয়ে দিয়েছি। আশা করি ক’দিনের মধ্যেই রাস্তাটি পূর্ত দফতরের হাতে দিতে পারব।’’
১৯৬৮-৭৯ সালে তৈরি হয়েছিল এই রাস্তাটি। পিছিয়ে পড়া এলাকার কৃষকেরা যাতে তাঁদের উত্পাদিত ফসল বাজারে নিয়ে যেতে পারেন, সে জন্যই রাস্তা বানানো হয়েছিল। কিন্তু তা সংস্কারের জন্য অর্থ দেবে কে? কৃষি বিপণন দফতর ওই খাতে অর্থ পায়নি। তাই কখনও পূর্ত দফতর, কখনও জেলা পরিষদ দায়িত্ব নিয়েছে। এ বার পূর্ত দফতর পুরোপুরি রাস্তার দায়িত্ব নিতে রাজি হওয়ায় খুশি পিংলা, ঝাঁকরা, চাঁদা, মেঠানি-সহ বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ। স্থানীয় প্রকাশ পালের কথায়, ‘‘বর্ষায় বাড়ির কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে খুব বিপদ হত। তখন তো রাস্তায় বাস চলে না। অনেক বেশি টাকা দিয়ে গাড়ি ভাড়া করতে হয়। এত দিনে সেই সমস্যা মিটবে।’’ মেদিনীপুর থেকে ওই পথে নিত্য যাতায়াত করা স্কুল শিক্ষক শান্তাশিস ভুঁইয়ারও বক্তব্য, ‘‘বর্ষায় খুব কষ্ট হত। আশা করি এ বার ভোগান্তি মিটবে।’’