অবরুদ্ধ: স্বাস্থ্যকেন্দ্র চত্বরে অবরুদ্ধ নিকাশি নালা। নিজস্ব চিত্র
চারিদিকে ছড়িয়ে আবর্জনা। অবরুদ্ধ নিকাশি নালাও। জঞ্জাল জমে মজে যাওয়া নালায় মশার আঁতুড়ঘর। এই পরিবেশেই খড়্গপুর-২ ব্লকের চাঙ্গুয়ালে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র চলছে ডেঙ্গি ও জ্বরে আক্রান্তদের চিকিৎসা। নজর নেই কারও।
শহর খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা একশো আশি ছাড়িয়েছে। খড়্গপুর-২ ব্লকেও ১৬ জন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত। ব্লকের বাসিন্দাদের অধিকাংশই এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরই নির্ভরশীল।
৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন চিকিৎসার জন্য। অথচ এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকেন্দ্রেই মশার কামড়ে নাজেহাল রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।
হাসপাতালে আসা রোগীর পরিজনেদের প্রশ্ন, যেখানে আরোগ্য লাভের জন্য রোগীরা আসেন, সেই হাসপাতাল চত্বরই যদিও মশার আঁতুড়ঘর হয়ে ওঠে, তবে রোগীরা সুস্থ হবেন কী করে। চাঙ্গুয়াল, সাঁকোয়া, লছমাপুর, চকমকরামপুর-সহ ৯টি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভিড় জমান।
চাঙ্গুয়াল গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বেনাপুরের বাসিন্দা বিবেক ঘোষ বলেন, “দিন কয়েক আগে বোন অসুস্থ থাকায় ওকে নিয়ে ব্লক হাসপাতালে গিয়েছিলাম। কিন্তু হাসপাতাল চত্বরে চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে আবর্জনা। দাঁড়ানোই দায়। নর্দমাও আবর্জনায় রুদ্ধ। মশার উপদ্রবও যথেষ্ট।” স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উল্টো দিকেই বাড়ি বিশ্বজিত বেরা। একইভাবে তিনিও বলছেন, “আমাদের এলাকায় একদিনও আবর্জনা সাফাই করতে দেখিনি। মশা মারার তেল স্প্রেও করা হয় না। হাসপাতালের বাইরে ও ভিতরে যত্রতত্র আবর্জনা পড়ে থাকে। কিন্তু স্বাস্থ্য দফতর কোনও পদক্ষেপ করেনি।”
এ বিষয়ে বিশেষ হেলদোল নেই স্বাস্থ্য দফতরের। হাসপাতাল চত্বরে আবর্জনা পড়ে থাকার অভিযোগ উঠলেও স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা তা মানতে নারাজ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। হাসপাতালে এমন অপরিচ্ছন্ন চেহারা কেন?
সদুত্তর এড়িয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভদীপ নায়েকের জবাব, “আমি মিটিংয়ে আছি। পরে কথা বলব।” পরে একাধিকবার তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। যদিও খড়্গপুরের অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস পাল বলেন, “আমি যতটুকু জানি চাঙ্গুয়াল হাসপাতাল চত্বরে আবর্জনা পড়ে নেই। সর্বত্র সাফাই চলছে।”