টিকা নেওয়ার লাইন । ঘাটাল সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র।
বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই ঘাটালে করোনা ভ্যাকসিন নেওয়ার হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছে।
ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি-সহ মহকুমার গ্রামীণ হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়ছে ভিড়। টিকার লাইনে চাপ বেড়েছে ঘাটাল পুরসভার হাসপাতালেও। পরিস্থিতি বুঝে অবশ্য তৎপর হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরও। তালিকায় ব্লকের সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের প্লাবিত গ্রামের বাসিন্দাদের নাম নথিভুক্ত করে টিকা দেওয়ার পদক্ষেপ করা হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা বলেন, “বন্যার জল কমতেই ঘাটালে টিকা নেওয়ার চাপ বাড়ছে। হাসপাতালগুলিতে কর্মসূচি চলছে। পর্যায়ক্রমে যাতে সকলে টিকা পান, তার জন্য পদক্ষেপ করা হচ্ছে।”
স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে, টিকা পর্যাপ্ত নয়। কিন্তু ঘাটাল মহকুমার সব হাসপাতালেই এখন করোনা ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি-সহ মহকুমার পাঁচটি গ্রামীণ হাসপাতালে প্রতিদিন তিনশো-চারশো জন করে টিকা পাচ্ছেন। মাসখানেক আগেও টিকার জন্য রাত জেগে অপেক্ষা করতেন সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতেই বানভাসী হয় ঘাটাল। বন্যার সময়ও অবশ্য টিকা কর্মসূচি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু বন্যা পরিস্থিতির সময় ঘাটালে টিকা নেওয়ার জন্য তেমন চাপ ছিল না। তা ছাড়া চন্দ্রকোনা ও দাসপুরের একাংশও জলমগ্ন ছিল। সেই সময় বন্যা কবলিত এলাকার বাইরে অনেকেই এসে টিকা নিয়ে গিয়েছেন। তাঁদের সেসময়ে অপেক্ষাও করতে হয়নি বলে খবর। বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই এবার ভ্যাকসিনের জন্য আগের চাপ ফিরে এসেছে।
টানা কুড়ি বাইশ দিন ধরে জলবন্দি ছিল ঘাটাল। সবে স্বাভাবিক হলেও নীচু এলাকাগুলিতে এখনও জল জমে রয়েছে। জনজীবন অবশ্য পুরোপুরি স্বাভাবিক। বন্যার জলে ঘাটালের একাধিক রাস্তাঘাট ভেঙে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। সেই সব তোয়াক্কা না করেই অনেকে ছুটছেন টিকার লাইনে। ভিড় বাড়ছে হাসপাতাল গুলিতেও। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল, বীরসিংহ গ্রামীণ হাসপাতাল-সহ মহকুমার সবর্ত্রই এক ছবি। ঘাটাল পুরসভার প্রশাসক বিভাস ঘোষ বলেন, “ঘাটাল শহরেও টিকার চাপ বেড়েছে। প্রতিদিন দুশো জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছে।”
ভুক্তভোগীরা জানাচ্ছেন, বন্যার পরিস্থিতিত কোভিড বিধি মাথায় ছিল না। শিবির গুলিতে একসঙ্গে শতাধিক মানুষ ছিলেন। অনেকেই আবার বাড়ির ছাদ অথবা অন্যের বাড়িতে থেকে দিন কাটিয়েছেন। অনেকেই ত্রাণের লাইনেও দাঁড়াচ্ছেন। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কাও রয়েছে। ফলে সবাই চাইছেন, টিকা নিয়ে নিতে।