দাসপুরে খুকুরদহ লক্ষ্মী বাজার পুজো কমিটির মণ্ডপ। — নিজস্ব চিত্র।
কোথাও নেপালের ভগ্নপ্রায় মন্দিরে আদলে মণ্ডপ আবার কোথাও চন্দননগরের আলোর জাঁক— দুর্গাপুজোর মতোই দাসপুরের লক্ষ্মীপুজোতেও থিমের ছোঁয়া।
দাসপুর থানা এলাকায় ২৬টির মতো সবর্জনীন লক্ষ্মীপুজো হয়। তার মধ্যে বড় বাজেটের পুজো ১০-১২টি। দাসপুরে মূলত সব্জি ও ফুল চাষ হয়। চাষিরা মাঠ থেকে সব্জি ও ফুল তুলে স্থানীয় বাজারে নিয়ে আসে। সেখান থেকে ফড়ে মারফত সেই সব্জি চলে যায় কলকাতার বাজারে। কৃষিতে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দাসপুরের বিভিন্ন বাজার কমিটি প্রতিবছরই লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন করে।
সোনামুই হাট সবর্জনীন পুজো কমিটির মণ্ডপ নেপালের ভগ্নপ্রায় মন্দিরের আদলে। পুজোর এ বার ৬০তম বর্ষ। পুজো কমিটির সভাপতি অজিত মণ্ডল বলেন, “পুজো উপলক্ষে সাত দিন ধরে মেলা হবে। বস্ত্র বিতরণ, নরনারায়ণ সেবা, যাত্রার আয়োজনও রয়েছে।”
৬৫ বছরে পড়ল সাগরপুর পল্লি উন্নয়ন সমিতির সবর্জনীন লক্ষ্মী পুজো। স্থায়ী মণ্ডপে পুরোনো রাজবাড়ির আদলে মণ্ডপ। নজর কাড়বে রংবাহারি আলো। চাষবাসের খুঁটিনাটি পদ্ধতি-সহ বিভিন্ন দৃশ্য তুলে ধরা হয়েছে আলোকসজ্জায়। পুজো কমিটির সম্পাদক বলরাম হাইত বলেন, “পুজো উপলক্ষে আট দিন মেলা চলবে। এ ছাড়াও বিনামূল্যে স্বাস্থ্য
পরীক্ষা শিবিরের আয়োজন হয়েছে। হবে নাটকও।”
খুকুড়দহ লক্ষ্মীবাজার সবর্জনীন পুজো কমিটির এ বার ৫৭তম বর্ষ। প্রায় সাত লক্ষ টাকা খরচ করে পাট দিয়ে দক্ষিণ ভারতের একটি মন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। এখানেও বসছে মেলা। রবিবার মেলার উদ্বোধন করতে আসার কথা পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর। পুজো কমিটির পক্ষে শক্তিপদ আদক বলেন, “৫৭ বছর আগে কৃষিতে সমৃদ্ধির লক্ষ্যে পুজো শুরু হয়েছিল। আজও সেই ট্রাডিশন সমানে চলেছে। এ ছাড়া পুজো উপলক্ষে ফি বছরের মতো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা তো রয়েইছে।”
দাসপুর শহরের মতো স্থানীয় জগন্নাথপুর, গোপীগঞ্জ, রাজনগর, সোনাখালি, ভগবানচক, আজুড়িয়া-সহ অন্যান্য পুজোকমিটিগুলিও পিছিয়ে নেই জাঁকজমকে। মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মতো এই সব পুজোয় নজর কাড়বে বাহারি আলোকসজ্জাও।
লক্ষ্মীপুজো ঘিরে উৎসবের আমেজ তমলুকের উত্তর সাওতানচক বাজার এলাকাতেও। তমলুক–শ্রীরামপুরগামী রাজ্য সড়কের ধারে ওই বাজারের ব্যবসায়ী ও স্থানীয় একাধিক ক্লাবের উদ্যোগে বাজার ও সংলগ্ন এলাকায় মোট আটটি সর্বজনীন লক্ষ্মী পুজোর আয়োজন হয়। উত্তর সাওতানচক বাজার কমিটি, কসমস ক্লাব, ভাইভাই সঙ্ঘ, নবীন সঙ্ঘ, জাগরণ সঙ্ঘের পুজোয় নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। উত্তর সাওতানচক বাজার কমিটির সম্পাদক নারায়ণ বাগ বলেন, ‘‘শনিবার লক্ষ্মীপুজোর উদ্বোধনের পাশাপাশি বিভিন্ন ক্লাবের উদ্যোগে পাঁচদিন ধরে নানা রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছে। মেলাও বসেছে।’’