পোস্ত চাষ বন্ধ করতে মাঠে নামল প্রশাসন। পোস্ত চাষ না করার আবেদন জানিয়ে প্রচারও শুরু হয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার বক্তব্য, এই বিষয়ে সচেতনতা বাড়ানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, সম্প্রতি মেদিনীপুরে এক বৈঠকও করেছেন জেলাশাসক। পোস্ত চাষ বন্ধে কী কী করণীয়, সেই নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। মেদিনীপুরের কালেক্টরেটের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে ছিলেন কৃষি, আবগারি, বন দফতরের পদস্থ কর্তারা। বৈঠকে ঠিক হয়, এই সব দফতরই পোস্ত চাষ বন্ধে সচেতনতামূলক প্রচার চালাবে।
মেদিনীপুরের ডিএফও রবীন্দ্রনাথ সাহা বলেন, “আফিম বা পোস্ত চাষ যে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং বেআইনি, প্রচারে তাই জানানো হচ্ছে।” বন দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, পোস্ত চাষ থেকে বিরত না হলে সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ- প্রশাসন কড়া পদক্ষেপই করবে। পাশাপাশি, কোথাও পোস্ত চাষ হচ্ছে জানতে পারলে তৎক্ষনাৎ পুলিশ বা আবগারি দফতরে খবর পৌঁছনোর পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।
আবগারি দফতরের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন এলাকায় সচেতনতামূলক প্রচার চলছে। জেলার কৃষি কর্মাধ্যক্ষ নির্মল ঘোষও বলেন, “পোস্ত চাষ বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চলছে।” নির্মলবাবুরও দাবি, “এখন জেলার কোথাও পোস্ত চাষ হয় না!”
কেন পোস্ত চাষ বন্ধে মাঠে নামল প্রশাসন? আফিম বা পোস্ত চাষ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ এবং বেআইনি। তাও পশ্চিম মেদিনীপুরের বেশ কিছু এলাকায় এই চাষ হয় বলে অভিযোগ। কেউ নিজের জমিতে চাষ করেন। কেউ জমি অন্যকে দিয়ে দেন। বদলে মোটা টাকা নেন। খাতায়-কলমে অনেক নিয়মই রয়েছে। কেমন? যেমন পোস্ত চাষ করলে সর্বাধিক কুড়ি বছর জেল এবং দু’লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। কেনাবেচা করলে কমপক্ষে দশ বছর জেল এবং এক লক্ষ টাকা জরিমানা হতে পারে। তবে অনেক সময় পুলিশ- প্রশাসন পোস্ত চাষ হচ্ছে দেখেও দেখে না বলে অভিযোগ! বেআইনি কারবারিদের সঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের একাংশের যোগসাজশ থাকে। ফলে চাষের খবর ধামাচাপাই থাকে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “পোস্তর ফলের রস থেকে আফিম ও হেরোইনের মতো ভয়ঙ্কর মারণ মাদকদ্রব্য তৈরি হয়। তাই পোস্ত চাষ আইনত কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।”
জেলা প্রশাসনের এক সূত্রের দাবি, অবৈধ পোস্ত চাষ করার জন্য জেলায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পাশাপাশি, বেশ কিছু সংখ্যক পলাতক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কঠোর আইন মোতাবেক মামলাও রুজু করা হয়েছে। এ বার আগেভাগে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। প্রশাসনিক এই তৎপরতায় জেলায় পোস্ত চাষ ঠেকানো যায় কি না, সেটাই দেখার!