প্রতীকী ছবি।
বুধবার ঘড়ির কাঁটায় তখন বিকেল ৫টা ২০। শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় আমপানের তাণ্ডবে তটস্থ মেদিনীপুর। তখনই মেদিনীপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে জন্ম হল এক শিশুর। পরিজনেরা ঘূর্ণিঝড়ের নামেই তার নাম রেখেছেন ‘আমপান’।
ওই সদ্যোজাতের মা রিজিয়া বিবি বলেন, ‘‘ঘূর্ণিঝড়ের সময়ে জন্ম হয়েছে। তাই পুত্রসন্তানের নাম আমপান রেখেছি।’’ রিজিয়ার স্বামী রাজ্জাক মোল্লার কথায়, ‘‘পুত্রসন্তানের এমন নামে সময়টাকে ধরে রাখার চেষ্টা করলাম।’’ রিজিয়ার স্বাভাবিক প্রসব হয়নি। তাঁর সিজার করে প্রসব করাতে হয়েছে। ওই দম্পতি ধন্যবাদ জানাচ্ছেন সেই সব ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের, যাঁরা ঝড়ের মধ্যেই তড়িঘড়ি হাসপাতালের অস্ত্রোপচার করানোর জন্য এসেছিলেন। ওই বেসরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অস্ত্রোপচারে ছিলেন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর মণ্ডল, অ্যানাস্থেটিস্ট অসীম মাইতি প্রমুখ। দীপঙ্কর মানছেন, ‘‘আজকে ওঁর (রিজিয়ার) হাসপাতালে আসার কথা ছিল না। বাধ্য হয়ে দুর্যোগের মধ্যেই উনি হাসপাতালে এসেছেন।’’ জানা গিয়েছে, সপ্তাহ তিনেক পরে স্বাভাবিক প্রসবের দিন ছিল রিজিয়ার। প্রসব যন্ত্রণা ওঠায় এ দিন বিকেলেই হাসপাতালে আসেন ওই প্রসূতি। তড়িঘড়ি তাঁর সিজার করার ব্যবস্থা করা হয়। দুর্যোগের মধ্যেই তড়িঘড়ি হাসপাতালে ছুটে আসেন দীপঙ্কররা। স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ দীপঙ্কর জানাচ্ছেন, মা এবং সদ্যোজাত, দু’জনেই সুস্থ রয়েছে। পুত্রসন্তানের কী নাম রাখা হবে, রিজিয়ার কাছে জানতে চেয়েছিলেন দীপঙ্কর। রিজিয়া চটপট জানিয়ে দেন, পুত্রসন্তানের নাম হবে ‘আমপান’।
রাজ্জাকের বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরের নাড়াজোলের ভাগীরথপুরে। সেখান থেকেই গাড়ি ভাড়া করে স্ত্রীকে নিয়ে এ দিন বিকেলে মেদিনীপুরের ওই বেসরকারি হাসপাতালে আসেন রিজিয়া। প্রসূতি যন্ত্রণায় ছটফট করছিলেন। পরিস্থিতি দেখে হাসপাতাল থেকে জরুরি ‘কল’ করা হয় দীপঙ্করদের।