অবশেষে সোজা হল রাবার গাছ। নিজস্ব চিত্র
‘আমপান’ ঝড় কোমর ভেঙে মাটিতে লুটিয়ে পড়েছিল প্রাচীন রাবার গাছ। স্থানীদের আবেগ জড়িয়ে থাকা সেই গাছ অবশেষে প্রশাসনের চেষ্টায় পুনঃস্থাপন করা হল শনিবার।
হলদিয়ার পার্বতীপুর পতিতপাবনী হাইস্কুল চত্বরে রয়েছে ওই রাবার গাছটি। সত্তরের দশকে গাছটি লাগানো হয়েছিল। সেটিকে সোজা করতে উদ্যোগী হন হলদিয়ার বিডিও সঞ্জয় শিকদার এবং সুতাহাটা থানা। বৃহস্পতিবার দুটি হাইড্রা এবং একটি জেসিবি আনা হয় প্রথমে। ভাঙা হয় স্কুলের প্রাচীর। শুক্রবার রাতে সেখানেই ছিলেন সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অভিষেক দাস। অভিষেক বলেন, ‘‘গাছটি বাঁচাতে সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। হরমোন প্রয়োগ করা হয়েছে গাছের শিকড়ে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মতো গাছের উচ্চতা কমানো হয়েছে। ছেঁটে ফেলা হয়েছে ডাল পালা।’’
এদিন সুতাহাটা পঞ্চায়েত সমিতির ইঞ্জিনিয়ার শুভজিৎ মণ্ডল ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, গাছটির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য উচ্চতা কমানো হয়েছে। সুতাহাটার বিডিও সঞ্জয় বলেন, ‘‘এই গাছ বাঁচানোর লড়াই ছিল প্রতীকী। এই ধরনের পূর্ণ বয়স্ক গাছের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকলে তার শেষ দেখে ছাড়া উচিত।’’
গাছ বাঁচানোয় খুশি স্থানীয়েরা। এ দিন গাছ সোজা হতেই অনেকে যুদ্ধ জয়ের উত্তেজনায় হাততালি দিয়ে ওঠেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক দীনেশ রায় প্রামাণিক বলেন, ‘‘শতাব্দী প্রাচীন এই স্কুলের ঐতিহ্যর সঙ্গে জড়িত এই গাছ। বহু ঘটনার সাক্ষী। গাছটি ভেঙে যাওয়ায় মন খারাপ হয়ে গিয়েছিল সবার। কিন্তু যে ভাবে প্রশাসন যেভাবে গাছ বাঁচাতে এগিয়ে এল, তা প্রশসংনীয়।’’ স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী সায়ন্তনী বেরার চোখে মুখে ছিল বিস্ময়। তার কথায়, ‘‘এ ভাবে ভেঙে পড়া গাছ তোলার পদ্ধতি আগে তো কোনও দিন দেখিনি। অবাক হয়ে গিয়েছি।’’ সহকারি প্রধান শিক্ষক শ্যামসুন্দর চট্টোপাধ্যায়, বিশ্বজিৎ সাহুেরা বলছেন, ‘‘অনেক লড়াইয়ের পর গাছটি বেঁচে উঠল। এটা সত্যিই চ্যালেঞ্জের কাজ ছিল।’’