বিনা যুদ্ধে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তেও নারাজ বামেরা। ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভরা জোয়ারেও পূর্ব মেদিনীপুরে তিনটি আসনে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে তারা। ফলে তমলুক লোকসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচনেও সেই জয় বজায় রাখাটাই চ্যালেঞ্জ বামেদের। আর দলকে চাঙ্গা করতে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, এবং বৃন্দা কারাতের মত হেভিওয়েট নেতাদের প্রচারে নামানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি নিমতৌড়িতে পূর্ব মেদিনীপুরের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠকে এই প্রস্তাব দেওয়াও হয়েছে দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে।
পূর্ব মেদিনীপুরের সিপিএম জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, এবং বৃন্দা কারাতকে প্রচারে আসুন, দলের কর্মী সমর্থকরা চান। আগামী ১৪ নভেম্বর মহম্মদ সেলিম, ১৬-১৭ নভেম্বর বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্র আসবেন। বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য ও বৃন্দা কারাত যাতে আসেন, তার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।’’
বামেদের খাস তালুক পূর্ব মেদিনীপুরের রাজনৈতিক ছবিটা একটু একটু করে বদলাচ্ছিল ২০০৭ সাল থেকেই। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে বড় ধাক্কা আসে। জেলার ১৬টি বিধানসভা আসনই দখল করে তৃণমূল। সেই শুরু। তার পর আর যেন মাথা তুলে দাঁড়াতেই পারছিল না বামেরা। তবে ছবিটা আবার একটু বদলায় ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে। জেলার তমলুক, পূর্ব পাঁশকুড়া আর হলদিয়া বিধানসভা কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীদের হারিয়ে দেন বাম প্রার্থীরা। আর সেই জয়কেই হাতিয়ার করতে চাইছে বামেরা।
এর মাঝে ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন হলদিয়ার দক্ষিণ জোনাল কমিটির সম্পাদক শ্যামল মাইতি। শ্যামলবাবুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে একেবারেই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রথম থেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন বাম নেতারা। তাঁদের অভিযোগ ছিল, মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হয়েছে দক্ষ সংগঠক শ্যামলবাবুকে।
দলীয় সূত্রে খবর, ৫০ শতাংশ বুথের জন্য কমিটি গড়া হয়ে গিয়েছে। একমাত্র বাকি রয়েছে নন্দীগ্রামের বুথ কমিটি গড়া। সেই কাজও খুব তাড়াতাড়ি হবে বলেও দাবি তাঁদের। তবে নিচু তলার কর্মীরা যাতে আরও সাহস পান, তার জন্য প্রয়োজন প্রকাশ্য সমাবেশের। আর সেখানে যদি বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, বিমান বসু, মহম্মদ সেলিম, বৃন্দা কারাতের মত হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীরা হাজির থাকে, তা হলে সেটা কর্মীদের মনের জোর বাড়াতে সাহায্য করবে বলেই মত রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের।