তমলুক লোকসভা উপনির্বাচনে আসন ধরে রাখতে দিন কয়েক আগেই ‘উপহার’ দিয়ে দলীয় সংগঠন চাঙ্গা করতে চেয়েছিল তারা। সেই লক্ষ্যেই বামেরাও প্রস্তুতি শুরু করেছে। তমলুক কেড়ে নিতে ইতিমধ্যেই হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে সাংগঠনিক প্রস্তুতি হয়েছে।
সিপিএম সূত্রে খবর, হলদিয়া দক্ষিণ জোনাল কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিধানসভা নির্বাচনের সময় যে বুথ, ওয়ার্ড এবং অঞ্চল কমিটিগুলি গঠিত হয়েছিল, সেগুলি এই মুহূর্তে ভাঙা হবে না। বরং কর্মসূচি বাড়িয়ে ওই কমিটিগুলিকেই সচল রাখা হবে। ইতিমধ্যেই এই মর্মে লোকাল কমিটিকে চিঠিও পাঠিয়েছে হলদিয়া দক্ষিণ জোনাল কমিটি। পার্টি কর্মীদের জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
জোনাল সম্পাদক শ্যামল মাইতির বক্তব্য, “এ বারের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে তিনটি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। এক, নিষ্ক্রিয় থেকে যে সব কর্মী দলকে সমর্থন করেছে তাঁদের সক্রিয় করা। দুই, সামনে থেকে যে সব কর্মী প্রত্যক্ষ লড়াই করেছে তাঁদের দায়িত্ব বৃদ্ধি করা। তিন, যে সব কর্মী দলের বিরোধীতা করেছে তাঁদের বিরুদ্ধে দলীয় স্তরে ব্যবস্থা গ্রহণ।” এই মর্মে তালিকাও তৈরি হয়েছে বলে খবর। তিনটি পৃথক তালিকা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে পার্টি সদস্য, স্ট্যান্ডিং মেম্বার, এবং অক্সিলিয়ারি গ্রুপের সদস্য নির্বাচিত হবেন। কে, কোন ভূমিকা পালন করেছে তা নথিভুক্ত করে জেলা কমিটির দফতরে পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
জোনাল কমিটির বৈঠকে আরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, হলদিয়ার সমস্ত মানুষকে নির্বাচনে জয়ের জন্য বিধানসভা কমিটির পক্ষ থেকে ধন্যবাদ অভিনন্দন বার্তা পাঠানো হবে। শ্যামলবাবু বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের আগে যে ভাবে বাড়ি বাড়ি প্রার্থী তাপসী মণ্ডলের চিঠি পাঠানো হয়েছিল সেভাবেই ৭০ হাজার পরিবারের কাছে চিঠি দেওয়া হবে ধন্যবাদ জানিয়ে।’’
বিধানসভা নির্বাচনে হলদিয়ায় তৃণমূলের মধুরিমা মণ্ডলকে ২১ হাজার ৪৯৩ ভোটে পরাজিত করে সিপিএমের তাপসী মণ্ডল বিধায়ক হয়েছেন। স্থানীয় সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, গত কয়েক বছর ধরেই দলীয় নেতৃত্ব ও কর্মসূচির অভাবে সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়েছিল। বিধানসভা জয়ের পর হলদিয়ায় সিপিএমের জনমুখী ভাবমূর্তি গড়ে তোলার উপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের দাবি, নির্বাচনে বহু মানুষ দলকে আড়াল সমর্থন করেছেন। সন্ত্রাসের ভয়ে তাঁরা প্রকাশ্যে গণ সংগঠনের কর্মসূচিতে যোগ দিতে পারছেন না। বিভিন্ন সামাজিক কর্মসূচির মাধ্যমে দল ওই সমস্ত মানুষের কাছে পৌঁছতে চায়। তাই বন্দরে শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, রক্তদান শিবিরের মত কর্মসূচি ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে। রাজ্য নেতৃত্বও হলদিয়াকে আন্দোলনের মুখ করে এগোতে চায়।