Government Land

Government Lands: সরকারি জমির পাট্টায় দুর্নীতির অভিযোগ

কয়েকদিন আগে ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে ছোট আঙারিয়ার কয়েকজন বাসিন্দা এই নিয়ে অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০২২ ০৭:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

সরকারি জমির পাট্টা পেতে দেওয়া হয়েছিল টাকা। কিন্তু পাট্টা তো মেলেইনি, টাকাও ফেরত পাওয়া যায়নি। অন্য কোনও এলাকা নয়, এমনই অভিযোগ উঠেছে খোদ পশ্চিম মেদিনীপুরের ছোট আঙারিয়া থেকে।

Advertisement

২০০১ সালের ৪ জানুয়ারির রাতে ছোট আঙারিয়ায় তৃণমূল কর্মী প্রয়াত বক্তার মণ্ডলের বাড়িতে সিপিএম গণহত্যা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছিল। বাম আমলে সেই বিষয়টি বার বার সামনে এনেছিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সম্প্রতি বীরভূমের বগটুই গ্রামে ‘গণহত্যা’র ঘটনা সামনে আসার পরে ফের নতুন করে আলোচনায় এসেছে ছোট আঙারিয়া। এবার সেই গ্রাম থেকেই পাট্টা দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে জেলা তৃণমূলের অন্দরে।

কয়েকদিন আগে ব্লকের তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে ছোট আঙারিয়ার কয়েকজন বাসিন্দা এই নিয়ে অভিযোগ করেছেন। তাঁদের দাবি, আগের পঞ্চায়েত বোর্ডের (২০১৩-১৮) আমলে গ্রামের অধিকাংশ পরিবারের সদস্যেরা সরকারি জমির পাট্টা পাওয়ার জন্য নিজেদের মধ্যে টাকা সংগ্রহ করে গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষের কাছে জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু কেউই পাট্টা পাননি। টাকাও ফেরত পাননি। শাসকদলের নেতৃত্বের কাছে অভিযোগ জানালেও, ওই পরিবারগুলি অবশ্য প্রশাসনের কাছে এখনও কোনও অভিযোগ জানাননি।
তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘গ্রামের মানুষের কাছ অভিযোগ পেয়েছি, খোঁজ নিচ্ছি।’’ তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি অজিত মাইতি বলেন, ‘‘অভিযোগের সত্যতা যাচাই হবে। টাকা নিয়ে এসব কাজ করলে কাউকে ছাড়া হবে না।’’

Advertisement

ছোট আঙারিয়া ‘গণহত্যা’ কাণ্ডের প্রধান সাক্ষী বক্তার মণ্ডল সম্প্রতি মারা গিয়েছেন। তাঁর পারলৌকিক কাজে গিয়েছিলেন ব্লকের কয়েকজন তৃণমূল নেতা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন দলের ব্লক সভাপতি সেবাব্রত ঘোষ, জেলা নেতা তথা গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ অসীম সিংহরায় প্রমুখ। জানা গিয়েছে, ওই নেতাদের কাছে পাট্টা সংক্রান্ত অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের ক্ষোভ, আরও একটা পঞ্চায়েত নির্বাচন চলে এল। কিন্তু ২০১৩-১৮ সালের পঞ্চায়েত বোর্ডের আমলে সরকারি জমির পাট্টা দেওয়া হবে বলে টাকা নেওয়া হলেও সেই পাট্টা এখনও মিলল না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন গ্রামবাসীর অভিযোগ, ‘‘পাট্টার জন্য গ্রামের প্রায় ৬০টি পরিবারের কাছ থেকে প্রায় ৩ লক্ষ টাকা তুলে তখন যিনি এই কাজ দেখতেন, সেই কর্মাধ্যক্ষের কাছে দিয়ে আসা হয়েছিল। তারপর অনেকবার বলা হয়েছে। বিএলএলআরও দফতরেও খোঁজ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু টাকা দেওয়া কোনও পরিবারই পাট্টা পাননি।’’ কিন্তু এতদিন পরে অভিযোগ করা হচ্ছে কেন? অভিযোগকারীদের বক্তব্য, ভয়ে চুপ ছিলেন তাঁরা। নেতারা গ্রামে আসতে সাহস করে বলা হয়েছে। তাঁদের অনুরোধ, পাট্টা মিলুক বা না মিলুক, গরিব পরিবারগুলি যাতে টাকা ফেরত পান সেটা দেখতে বলা হয়েছে। প্রশাসনকেও বলা হবে।

২০১৩-১৮ পর্যন্ত গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ ছিলেন তৃণমূল নেতা সঞ্জয় মণ্ডল। তাঁর অবশ্য দাবি, ‘‘সেই সময়ে প্রধান, ভূমি দফতরের আরআই, পঞ্চায়েত সমিতির সহ সভাপতি, যিনি দলের ব্লক সভাপতিও ছিলেন, তাঁরা এটা ভাল জানবেন। আমি কিছু জানি না। টাকা নিয়ে পাট্টা দেওয়ার বিষয়টিও জানা নেই।’’ তিনি জুড়েছেন, ‘‘আমি যতটুকু জানি সেই সময়ে স্থায়ী সমিতিতে পাশ হয়ে ওই এলাকার কিছু পাট্টার একটা ফাইল এসডিও-র কাছে গিয়েছিল। সেটা একটু ভুলের জন্য ফেরত আসে। পরে বর্তমানে পঞ্চায়েত সমিতির স্থায়ী সমিতি সেটি সংশোধন করে আর জমা দেয়নি।’’ গড়বেতা ১ পঞ্চায়েত সমিতির বর্তমান বন ও ভূমি কর্মাধ্যক্ষ তথা দলের জেলা নেতা অসীম সিংহরায় বলেন, ‘‘দলের কাছে অভিযোগ এসেছে, খতিয়ে দেখা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা থাকলে দল কঠোর ব্যবস্থা নেবে।’’ গড়বেতা ১ বিএলআরও কল্লোল বিশ্বাস জানান, সরকারি জমির পাট্টা প্রদানে টাকার লেনদেন একেবারে বেআইনি। তবে এই নিয়ে অভিযোগ জমা পড়েনি। অভিযোগ এলে তদন্ত হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement