প্রতীকী ছবি।
শহর এলাকার গরিবদের জন্য পাকা বাড়ি প্রকল্পে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অর্থ বরাদ্দের পর তমলুক পুরএলাকায় উপভোক্তাদের বাড়ি তৈরির কাজ চলছে। ইতিমধ্যেই এক হাজার মতো বাড়ি তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় খোদ প্রকল্পের নোডাল অফিসারের স্ত্রীর নাম থাকার অভিযোগ উঠল।
অভিযোগের ভিত্তিতে রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতর তমলুক পুরসভার কাছে রিপোর্ট চেয়েছে। যা নিয়ে পুরসভা ও রাজনৈতিক মহলে শোরগোল পড়েছে। পুর-প্রশাসক রবীন্দ্রনাথ সেন যদি দাবি করেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি প্রাপকদের তালিকায় প্রকল্পের নোডাল অফিসারের স্ত্রীর নাম রয়েছে এটা ঠিক। তবে তিনি পুরসভায় অস্থায়ীভাবে নিযুক্ত। প্রকল্পে গৃহহীন পরিবারকে পাকাবাড়ির অর্থ বরাদ্দ করার নিয়ম রয়েছে। ওই অফিসারের পরিবারের নিজস্ব বাড়ি নেই। তাই তাঁর স্ত্রী বাড়ি পেতেই পারেন। তবে রাজ্যের নগরোন্নয়ন দফতর (সুডা) পুরসভার এগজিকিউটিভ অফিসারের কাছে রিপোর্ট চেয়েছে। তিনি রিপোর্ট পাঠাবেন।’’
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রের খবর, শহর এলাকায় মাটিপর বাড়িতে থাকা গরিব পরিবার বা গৃহহীন পরিবারের জন্য পাকাবাড়ি তৈরিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে। বাড়ি তৈরির জন্য পরিবার পিছু ৩ লক্ষ ৬৮ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দেড় লক্ষ টাকা, পুরসভা ২৮ হাজার টাকা, উপকৃত পরিবার ২৫ হাজার টাকা দেয়। বাকি প্রায় ২ লক্ষ ১৫ হাজার টাকা দেয় রাজ্য সরকার। প্রকল্পে তমলুক পুরএলাকায় প্রায় ৩ হাজার পরিবার রয়েছে। কিন্তু প্রাপকদের তালিকায় নিয়ম বহির্ভূতভাবে আর্থিকভাবে সম্পন্ন ও পাকাবাড়ি রয়েছে এমন পরিবারের নামেও অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে অভিযোগ তুলেছে বিরোধী রাজনৈতিকদল। প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্বে থাকা পুরসভার নোডাল অফিসার সূর্যপদ মণ্ডলের স্ত্রী অষ্টমী মণ্ডলের নামও প্রাপকের তালিকায় রয়েছে বলে ১০ জুলাই জেলাশাসক ও রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরে অভিযোগ জানান বিজেপির তমলুক নগর মণ্ডলের সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ বেরা।
সুরজিতের অভিযোগ, ‘‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় পাকাবাড়ি প্রাপকদের মধ্যে খোদ প্রকল্পের তমলুক পুরসভার নোডাল অফিসারের স্ত্রীর নাম রয়েছে। ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ওই অফিসার নিয়মবহির্ভূতভাবে স্ত্রীর নামে টাকা পেয়েছেন। এভাবে সরকারি প্রকল্পে পুরসভায় দুর্নীতি করা হয়েছে। জেলাপ্রশাসন ও রাজ্য নগরোন্নয়ন দফতরে অভিযোগ জানালে পুরসভার কাছে এর রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে বলে আমরা জানতে পেরেছি।’’
তমলুক শহরের কংগ্রেস নেতা শেখ জিয়াদ বলেন, ‘‘গরিবদের জন্য বাড়ি তৈরিতে দুর্নীতি নিয়ে পুর কর্তৃপক্ষকে আগেই অভিযোগ জানানো হয়েছিল, কিন্তু তারা ব্যবস্থা নেয়নি। ’’