Coronavirus

সমন্বয়ের অভাব শবরপাড়ায়

প্রায় ৬০-৭০টি পরিবার থাকে এই পাড়ায়। অনেকেরই রেশন কার্ড নেই। যাঁদের কার্ড রয়েছে তাঁরা ২টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল পেয়েছেন।

Advertisement

বিশ্বসিন্ধু দে

কেশিয়াড়ি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫০
Share:

কোনওমতে দিন কাটছে লোধা-শবরদের। নিজস্ব চিত্র

জরুরি পরিস্থিতিতেও সমন্বয়ের অভাব! অভিযোগ, তাতেই পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশিয়াড়ির লেঙ্গামারা লোধা শবরপাড়ার অনেক পরিবারেই দু’বেলা হাঁড়ি চড়ছে না।

Advertisement

প্রায় ৬০-৭০টি পরিবার থাকে এই পাড়ায়। অনেকেরই রেশন কার্ড নেই। যাঁদের কার্ড রয়েছে তাঁরা ২টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল পেয়েছেন। কিন্তু যাঁদের নেই! গোল বেধেছে এখানেই। ব্লক প্রশাসন থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছিল, যাঁরা ওই ২ টাকা কিলোগ্রাম দরে চাল পাননি, তাঁদের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। ব্লক প্রশাসন থেকে পঞ্চায়েতে এসেছিল এই নির্দেশ। পঞ্চায়েত প্রধান তালিকা তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিলেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে। অভিযোগ, স্থানীয় সেই জনপ্রতিনিধি যে তালিকা তৈরি করেছিল তাতে কিছু ত্রুটি রয়ে গিয়েছে। ফলে এখন সেই তালিকা সংশোধনের কাজ চলছে।

সমন্বয়ের এই অভাবের জেরে অসহায় অবস্থা বহু পরিবারের। যেমন পাখি নায়েক। রেশন কার্ড নেই। নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করেছিলেন। সেই আবেদন গ্রাহ্য হয়েছে কি না, জানা নেই তাঁর। এখনও পর্যন্ত সরকারি কোনও সাহায্য পাননি তিনি। পাখি বললেন, ‘‘একবেলা খেয়েই দিন চালাতে হচ্ছে। ছেলেমেয়েরা বেশ কষ্ট পাচ্ছে বুঝতে পারছি। কী করব।’’ সাহায্য নিয়ে কেউ আসেনি? তাঁর জবাব ‘‘কেউ আসেনি। রেশন কার্ড তো নেই যে চাল পাব।’’

Advertisement

কেশিয়াড়ির বিডিও সৌগত রায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা এলাকা ঘুরে একটি রেশনকার্ডহীনদের তালিকা তৈরি করবে। তারপর যারা রেশন পাওয়ার যোগ্য তাঁরা অবশ্যই পাবেন। সেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’ তৃণমূল পরিচালিত খাজরা পঞ্চায়েতের প্রধান পথিক সিংহ বলেন, ‘‘ওই এলাকার পঞ্চায়েত সদস্যকে পরিবারের তালিকা করতে বলা হয়েছে। কয়েকদিনের মধ্যেই রেশন পাবেন।’’

তালিকায় নাকি ত্রুটি রয়েছে? পঞ্চায়েত প্রধানের দাবি, ‘‘খুব তাড়াতাড়ি ত্রুটি সংশোধন হবে। সকলে রেশন পাবেন।’’ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যা রেখা নায়েকের কথা, ‘‘আমাকে যাঁদের রেশন কার্ড নেই তাঁদের একটি তালিকা করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ভুল করে অনেকের নাম লেখা হয়ে গিয়েছে।’’

বিশু আড়ির রেশন কার্ড রয়েছে। সে কার্ডে চাল পেয়েছেন তিনি। বিশু বলেন, ‘‘দুবেলা খেতাম। এখন একবেলা খাচ্ছি। রেশনের দু’কিলো চাল কতদিন চলে?’’

মেদিনীপুর লোধা শবর কল্যাণ সমিতির জেলা সম্পাদক বলাই নায়েক বলেন, ‘‘দু’কিলো চালে সারা মাস হওয়ার কথা নয়। তবে সরকারও চেষ্টা করছে। সব জায়গার একই সমস্যা। প্রশাসনকে জানাব রেশনের চালের পরিমাণ বাড়ানোর।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement