লকডাউনের দ্বিতীয় দিন নন্দকুমারের খঞ্চি বাজার এলাকায় বন্ধ দোকান। শুনশান হলদিয়া-মেচেদা ৪১ নম্বর জাতীয় সড়ক। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
রাজ্য জুড়ে পর পর দু’দিন লকডাউনের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার কয়েক জায়গায় দোকান খোলায় পুলিশের নজরদারি নিয়ে অভিযোগ উঠেছিল। তবে শুক্রবার দ্বিতীয় দিনে লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো।
এক দিকে নিম্নচাপের কারণে নাগাড়ে বৃষ্টি, তার উপর পথে বেরোলে পুলিশের হাতে পড়তে হবে। ফলে এ দিন রাস্তায় লোকজন ছিল খুবই কম। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কাউকে বেরোতে দেখা যায়নি। তমলুক শহর, নন্দকুমার, খঞ্চি, ব্যবত্তারহাট, নোনাকুড়ি ও চণ্ডীপুর সহ বিভিন্ন বাজারের দোকানপাট বন্ধ ছিল। রাস্তায় গাড়ি চলাচল করেছে খুবই কম। লকডাউন কার্যকর করতে এ দিন পুলিশের তৎপরতাও দেখা গিয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশের টহলদারি চলে বিভিন্ন বাজার এলাকায় ও জাতীয় সড়কের মোড়ে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, এদিন তমলুক শহর কয়েকটি বাজারে সকালে কিছু অস্থায়ী দোকান বসার চেষ্টা করেছিল। সেগুলিকে বন্ধ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । তবে কাউকে আটক করা হয়নি। তমলুকের মানিকতলা, নিমতৌড়ি, নন্দকুমার, মেচেদায় রাজ্য ও জাতীয় সড়কে পুলিশ গাড়ি ‘চেকিং’ করে। জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া বাসিন্দা ও গাড়ি চালকদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসন সূত্রের খবর, চলতি মাসের প্রথম থেকে করোনা আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই রাজ্য সরকারের নির্দেশ মেনে কিছুদিন আগে কয়েকদিনের জন্য জেলায় গন্ডিবদ্ধ এলাকা তুলে দেওয়া হলেও ফের গণ্ডিবদ্ধ এলাকার নিয়মকানুন চালু করা হয়েছে। করোনা আক্রান্তদের এলাকাগুলিকে গণ্ডিবদ্ধ হিসেবে ঘোষণা করে লকডাউনের নিয়ম চালু করা হয়েছে। জেলায় বর্তমানে মোট ২৭টি এলাকাকে গণ্ডিবদ্ধ ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন।
নতুন করে পটাশপুর-১ ব্লকের বেশ কিছু এলাকা গণ্ডিবদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গত কয়েকদিনে পটাশপুর এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে। গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাড়াদিঘি গ্রাম, চিস্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে গোপালসিংপুর , গোকুলপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে কনকপুর গ্রাম এবং চিস্তিপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোনাড়া গ্রাম শনিবার সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ গন্ডিবদ্ধ এলাকায় দোকান বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।
জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজার ছুঁয়েছে। জেলা সদর তমলুক শহরে শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ১১০ জন। এর মধ্যে উদ্বেগ বাড়িয়েছে তমলুকের নিমতৌড়ির আবাসিক হোমের এক মহিলা কর্মী করোনা আক্রান্ত হওয়ায়। শুক্রবার ওই কর্মীর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসার পর তাঁকে ময়নার সেফ হোমে ভর্তি করা হয়েছে। হোম সূত্রের খবর, অসুস্থতার জন্য ওই কর্মী কয়েকদিন ধরেই হোম আইসোলেশনে ছিলেন। তাঁর করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহ করে পাঠানো হয়েছিল। শুক্রবার সকালে তাঁর করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে।