ঘাটাল শহরের রাস্তায় বাইক নিয়ে টহল পুলিশের। সোমবার দুপুরে। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
যাঁরা বলছেন নিয়ম মানুন, কী করছেন তাঁরা!
করোনার সঙ্গে লড়তে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন। বলছে প্রশাসন। বাস্তবে সে দূরত্ব মানা হচ্ছে কি না, তা দেখতে পথে টহল দিচ্ছে পুলিশ। কিন্তু সে দূরত্ব কি পুলিশ নিজে মেনে চলছে? পশ্চিম মেদিনীপুরে সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনায় উঠছে সেই প্রশ্ন।
সোমবার মেদিনীপুর থেকে ২৫ জন বিচারাধীন বন্দিকে একটি গাড়িতে আনা হয় ঘাটাল আদালতে। গাড়ি থেকে নামিয়ে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় কোর্ট লকআপে। ওই লকআপে আগে থেকে ছিলেন ৯ জন বন্দি। ফলে নড়াচড়ার জায়গা পাননি তাঁরা। আদালতের কাজ শেষ হওয়ার পর একই ভাবে একটি গাড়িতে ওই ২৫ জন বিচারাধীন বন্দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় মেদিনীপুরে। আইনজীবীদের একাংশ জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতির জেরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতেই ২৫ জনকে ঘাটাল উপ সংশোধনাগার থেকে মেদিনীপুরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
এখন শহর, শহরতলিতে রোজই অভিযানে বেরোচ্ছে পুলিশের দল। প্রতিটি দলে ১০-১২ জন করে পুলিশকর্মী থাকছেন। একের পর এক এলাকায় গিয়ে মানুষজনকে সতর্ক করছে ওই দল। বেশিরভাগ সময়েই মোটরবাইকে বেরোচ্ছেন পুলিশ কর্মীরা। পরে বাইক থেকে নেমে দল বেঁধে এলাকায় যাচ্ছেন। এখানেই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়েরা। সংক্রমণ এড়াতে যখন সামাজিক দূরত্বই একমাত্র উপায় তা হলে কেন দল বেঁধে অভিযানে যাচ্ছেন পুলিশকর্মীরা? কেন টহলদারির সময়ে তাঁরা নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে চলছেন না? জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (খড়্গপুর) কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘‘প্রতি থানাকেই এই বিষয়ে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট দূরত্বেই কথা বলতে হবে।” জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘পুলিশকর্মীদেরও নিরাপদ দূরত্বে থাকতে বলা হয়েছে। সকলে নিয়মবিধি ঠিকঠাক মানছেন কি না, তা দেখতে এ বার নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’
পুলিশকর্তারা বলছেন, দূরত্ব মানতে হবেই। কিন্তু পরিকাঠামো আছে তো? প্রশ্ন তুলছেন নীচুতলার কর্মীদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, ২৫ জন বন্দিকে যদি নিয়ম মেনে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হলে, একাধিক গাড়ি লাগবে। অভিযানেও গাড়ির সংখ্যা বেশি প্রয়োজন। পুলিশকর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, বাড়তি খরচ আসবে কোথা থেকে!