বিধি ভেঙে জমায়েত। নিজস্ব চিত্র
দলীয় বিধায়ক মারা গিয়েছেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। পরিবেশ মন্ত্রী তথা দলীয় নেতাও সংক্রমণের শিকার। এর পরেও হুঁশ ফেরেনি শাসকদল তৃণমূলের নেতাদের।
হলদিয়া টাউনশিপে বুধবার একটি জনসভা করেন তৃণমূলের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী। দেখা গিয়েছে, কার্যত দূরত্ব বিধি না মেনে সেখানে জমায়েত হয়েছে ভালই। সাংসদ অবশ্য দাবি করছেন বিধি মেনেই সভা হয়েছে।
গত ১৯ অগস্ট ‘আইওসি’র হলদিয়া টাউনশিপের রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের তৃণমূলের কর্মী সংগঠনের একটি সাধারণ সভা হয়েছিল। সেখানে সংগঠনের সভাপতির দায়িত্ব থেকে দিব্যেন্দু অধিকারীকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নতুন সভাপতি হন দেবপ্রসাদ মণ্ডল। সংগঠনের সদস্যদের অভিযোগ ছিল, বিপদেআপদে তাঁরা দিব্যেন্দুকে পাশে পান না। ওই ঘটনার পরে দিব্যেন্দু দেবপ্রসাদকে প্রতারক বলে কটাক্ষ করেন। এছাড়া, ওই সভাকে অবৈধ দাবি করে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ফের সংগঠনের সভাপতি হিসাবে পুনর্বহাল করা হয় দিব্যেন্দুকে।
তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই ঘটনার জবাব দিতেই টাউনশিপে ওই সংগঠনে অফিসের সামনে এ দিনের জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সভায় ছিলেন হলদিয়া পুরপ্রধান শ্যামল আদক, উপ পুরপ্রধান সুধাংশুশেখর মণ্ডল, আইএনটিটিইউসি’র জেলা কার্যকরী সভাপতি শিবনাথ সরকার।
এ দিন সভামঞ্চ থেকে ফের দেবপ্রসাদকে এক হাত নিয়েছেন দিব্যেন্দু। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে যে, দেবপ্রসাদ সংগঠনে বাইরের লোককে ঢুকিয়েছেন। অভিযোগ, এর পিছনে আর্থিক লেনদেনও হয়েছে। পাশাপাশি, দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘বিশ্বকর্মা পুজোর জন্য সংগঠনের বৈঠক ডেকে অন্যায় ভাবে সভাপতির পদ দখল করেছিলেন দেবপ্রসাদ। হলদিয়ায় কোনও হঠকারী সিদ্ধান্ত শুভেন্দু অধিকারীকে ছাড়া নেওয়া যাবে না।’’ তবে দেবপ্রসাদ বলছেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে দল করছি। সমস্ত ঘটনা রাজ্য নেতৃত্বকে জানানো হয়েছে। রাজ্যের নির্দেশ মেনেই কাজ করব।’’
এ দিনের জনসভায় কমপক্ষে হাজার দেড়েক লোক এসেছিলেন বলে দাবি। করোনা পরিস্থিতিতে যা উদ্বেগের বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতামতকে উপেক্ষা করেই প্রকাশ্য এভাবে সভা কী করে করছেন সাংসদ? যদিও দিব্যেন্দুর দবাব, ‘‘সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনেই সভা করা হয়েছে।’’
সভা নিয়ে বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নবারুণ নায়েকের কটাক্ষ, ‘‘সামাজিক দূরত্ব বিধি না মেনে ওঁরা মানুষের সর্বনাশ ডেকে আনছেন। এত লোকের জনসমাগম হল পুলিশ বাধা দিল না!’’