প্রতীকী চিত্র।
ভিন্ রাজ্য থেকে এসেছেন। আক্রান্ত হয়েছেন জ্বর-সর্দি-কাশিতে। স্বাভাবিকভাবেই করোনার ভয় দেখা গিয়েছে। চিকিৎসকেরা ইতিমধ্যে তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শও দিয়েছেন। কিন্তু মিলছে না অ্যাম্বুল্যান্স!
সম্প্রতি এমনই অভিযোগ উঠেছে কোলাঘাটে। স্থানীয় সূত্রের খবর, কোলাঘাট ব্লকের সিদ্ধা-২ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বছর সতেরোর এক কিশোর গত ২০ মার্চ ওড়িশা থেকে বাড়ি ফিরেছেন। এর পরেই তাঁর জ্বর-সর্দি-কাশির মতো করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। গত ২৬ মার্চ নিজে সাইকেল চালিয়ে প্রায় দু’কিলোমিটার দূরে পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যান ওই কিশোর। ওই যুবকের অভিযোগ, চিকিৎসক তাঁকে কয়েকটি ওষুধ দিয়ে দেন। পরের দিন তাঁর জ্বর বাড়ে এবং শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ওই দিন ফের পাঁশকুড়া সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে যান কিশোর। তখন তাঁকে মেদিনীপুর মেডিক্যালে রেফার করেন চিকিৎসক।
কিশোর জানাচ্ছেন, অ্যাম্বুল্যান্স না মেলায় তিনি মেদিনীপুরে যেতে পারেননি। বিষয়টি নজরে আসার পর হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা সংগঠনের কোলাঘাট ব্লক শাখার কার্যকরী সভাপতি নারায়ণচন্দ্র নায়ক প্রশাসনিক আধিকারিকদের বিষয়টি জানান। শনিবার সকালে সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সে করে কিশোর তমলুক জেলা হাসপাতালে যান। সেখানে চিকিৎসক ওই তাঁকে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে রেফার করেন।
ওই কিশোরের অভিযোগ, সরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের চালক বেলেঘাটা আইডিতে না নিয়ে গিয়ে তাঁকে বাড়ি পৌঁছে দেন। এই ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। কিশোর বলেন, ‘‘আমাকে তমলুক হাসপাতালের চিকিৎসক বেলেঘাটা আইডিতে যাওয়ার কথা বললেও, অ্যাম্বুলেন্স চালক বাড়ি নিয়ে আসেন। এলাকার এক স্বাস্থ্য কর্মী ফোন করে জানতে চান আমি বাড়ি পৌঁছেছি কি না।’’
এর পরেই প্রশ্ন উঠেছে, চিকিৎসক রেফার করার পরেও কেন তাঁকে বেলেঘাটায় নিয়ে যাওয়া হল না। করোনার সময় জেলা প্রশাসন যখন প্রতিটি ব্লকে দু’টি করে অ্যাম্বুল্যান্স রাখার পরামর্শ দিয়েছে, তখন ওই কিশোর প্রথমেই অ্যাম্বুল্যান্স পেলেন না কেন! এ বিষয়ে কোলাঘাটের বিডিও
মদন মণ্ডল বলেন, ‘‘ব্লকে দুটি অ্যাম্বুল্যান্স কাজ করছে। স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে খবর পেলেই তা পৌঁছে যাবে রোগীর বাড়িতে। অ্যাম্বুল্যান্স না পাওয়ার অভিযোগ ঠিক নয়।’’
বিষয়টি নিয়ে সরব হাসপাতাল ও জনস্বাস্থ্য রক্ষা সংগঠন। সংগঠনের কোলাঘাট শাখার সভাপতি নারায়ণ বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতরের ঢিলেমিতে কিশোর ঠিক সময়ে চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হলেন। এই বিষয়ে কোলাঘাট ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক শিবশঙ্কর খান বলেন, ‘‘কিশোরের উপরে আমরা নজরে রেখেছি। এ দিন থেকে ওষুধ চালু হয়েছে। রাতে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট না কমলে রবিবার বেলেঘাটা আইডিতে পাঠানো হবে।’’
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।