দু’পাশে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা। মাঝের রাস্তা দিয়ে মাস্ক না পরেই যাতায়াত। খড়্গপুরের নিমপুরায়। বৃহস্পতিবার। ছবি: কিংশুক আইচ।
: বিরোধীরা বলছে, গন্ডগোল গোড়ায়। শাসক দলের বিদায়ী কাউন্সিলরদের একাংশও মানছেন, কোথাও একটা গন্ডগোল হচ্ছে।
যত গন্ডগোল গণ্ডিবদ্ধ এলাকাকে নিয়ে। খড়্গপুর মহকুমা জুড়েই দেখা দিচ্ছে বিভ্রান্তি। রেলশহরে প্রশ্ন উঠছে সংক্রমণ কম হওয়া সত্ত্বেও কেন কার্যকর করা হচ্ছে কার্যত লকডাউন বিধি। মহকুমার কেশিয়াড়িতে অভিযোগ উঠেছে, প্রচার না থাকায় কার্যকর করা যায়নি ওই বিধি।
মঙ্গলবার রাতে নেওয়া গোটা খড়্গপুর শহর গণ্ডিবদ্ধ করার সিদ্ধান্তে বদল হয় বুধবার। প্রশাসন জানায়, ১৩, ১৫, ৩১, ৩২ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড গণ্ডিবদ্ধ করা হবে। বুধবার খড়্গপুরে এসে যে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বিষয়টি লটারির মাধ্যমে হচ্ছে কি না এমন কটাক্ষও করেন মেদিনীপুরের সাংসদ। তবে সিদ্ধান্তে কোনও বদল হয়নি। বৃহস্পতিবার থেকে নিয়ম মেনেই ওই পাঁচটি ওয়ার্ডে কার্যত লকডাউনের বিধি কার্যকর করে পুলিশ। প্রশাসনের এমন সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তৃণমূলের একাধিক বিদায়ী কাউন্সিলর। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী কাউন্সিলর তৃণমূলের ভেঙ্কট রামনা বলেন, “আমার ওয়ার্ডে এখন তো একজনও নতুন আক্রান্ত নেই। তাহলে কেন এভাবে গোটা ওয়ার্ড গণ্ডিবদ্ধ করে লকডাউন বিধি জারি করা হল বুঝতে পারছি না।” ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ী প্রবীণ কাউন্সিলর তৃণমূলের জহরলাল পালের ক্ষোভ, ‘‘আমার ওয়ার্ডে গত ১৫ দিনে একজনও আক্রান্ত হননি। অথচ সেই ওয়ার্ড গণ্ডিবদ্ধ করা হল। গোটা ওয়ার্ড কেন গণ্ডিবদ্ধ হল? প্রশাসনের কাছে এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি।” বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মহকুমাশাসক আজমল হোসেন বলেন, “এলাকা গণ্ডিবদ্ধ করার পিছনে হটস্পট ও গত কয়েকদিনের সংক্রমিতের সংখ্যা বিচার করা হয়। স্বাস্থ্য দফতর নিশ্চয় এসব বিচার করেই ওয়ার্ড বাছাই করেছে।”
কেশিয়াড়ির ওই তিনটি এলাকায় (খাজরা, হাসিমপুর, এলাসাই) ঘুরে দেখা গেল, বিধিনেষেধ তো দূরের কথা, স্বাভাবিক ছন্দে ছেদ পড়েনি এতটুকু। খোলা থাকল বাজার, দোকান। চলল কেনাবেচা। খাজরাতে খোলা ছিল পঞ্চায়েত অফিস। আর সেখানেই গাদাগাদি ভিড় চোখে পড়ল। অনেকের মুখে ছিল না মাস্ক। কেন পঞ্চায়েতে ভিড়? স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, আবাস যোজনার তালিকা প্রকাশ করেছে প্রশাসন। এদিন তাদের নামের যাচাই ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে এসেছিলেন অনেকেই। যাঁরা পঞ্চায়েত অফিসে এসেছিলেন তাঁদের বক্তব্য, কনটেনমেন্ট জ়োনের কথা তাঁরা জানেনই না। বিডিও সৌগত রায় বলেন, ‘‘আজ, শুক্রবার প্রশাসন ও পুলিশের তরফ থেকে সচেতনতার কাজ ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ নারায়ণগড়ের মকরামপুর এলাকার চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। শুধু ওষুধ দোকান ছাড়া বাকি দোকান বন্ধ ছিল।