করোনা পরীক্ষা ঘিরে উঠছে প্রশ্ন
Coronavirus in Midnapore

স্থানভেদে ফারাক সংক্রমণের হারে

পশ্চিম মেদিনীপুরের এই পরিসংখ্যানে বিস্মিত স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই।

Advertisement

বরুণ দে

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০০:২৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

জেলার নমুনা জেলায় পরীক্ষা হলে সংক্রমণের হার (পজ়িটিভিটি রেট) যা থাকছে, জেলার বাইরে, মূলত কলকাতায় পরীক্ষা হলে সংক্রমণের হার বেশ কয়েকগুন কমে যাচ্ছে। ফারাকটা বিস্তর, ১২-১৩ শতাংশের।

Advertisement

পশ্চিম মেদিনীপুরের এই পরিসংখ্যানে বিস্মিত স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকেই। জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের একাংশ সদস্যও বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনাও শুরু করেছেন বলে সূত্রের খবর। জেলা এবং কলকাতায় নমুনা পরীক্ষায় সংক্রমণের হারে তো বিস্তর ফারাক থাকছে?

সদুত্তর এড়িয়ে জেলাশাসক তথা করোনা মোকাবিলায় গঠিত জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান রশ্মি কমল বলেন, ‘‘কোভিড-রিপোর্ট এ ভাবে কখনও বিশ্লেষণ করে দেখা হয়নি। প্রয়োজনে দেখা হবে।’’ নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের এক সদস্য অবশ্য বলেন, ‘‘দুই ক্ষেত্রের ফারাকটা কম নয়। এতে জেলায় সংক্রমণ কোন স্তরে রয়েছে তাও ঠিকঠাক বোঝা যাচ্ছে না।’’

Advertisement

ঘরে-বাইরে, দুই ছবি

মেদিনীপুর মেডিক্যাল

• ২২ অগস্ট ৪৪ শতাংশ

• ২৫ অগস্ট ৩৬ শতাংশ

• ৫ সেপ্টেম্বর ১৫ শতাংশ

এসএসকেএম

• ২৯ অগস্ট ২ শতাংশ

• ৩১ অগস্ট ৩ শতাংশ

• ২ সেপ্টেম্বর ১ শতাংশ

(জেলার নমুনা পরীক্ষা কবে-কোথায় ও সংক্রমণের হার কেমন। তথ্য সূত্র: পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন)

জেলার মধ্যে একমাত্র মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই আরটি-পিসিআর পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা হয়। কোনও কারণে মেদিনীপুর মেডিক্যালের ল্যাবরেটরি বন্ধ থাকলে জেলার নমুনা কলকাতায় পাঠানো হয়। সম্প্রতি একাংশ কর্মী করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় মেডিক্যালের ল্যাবরেটরি দিন কয়েক বন্ধ ছিল। তখন জেলার নমুনা এসএসকেএমে পাঠানো হয়েছিল। সেই সময়ই এই ফারাক সামনে আসে।

আইসিএমআর জানিয়েছে, করোনায় নিশ্চিত আরটি-পিসিআর। এর বাইরে ট্রু-ন্যাট এবং অ্যান্টিজেন টেস্টও হচ্ছে। আরটি-পিসিআর অর্থাৎ, ‘রিভার্স ট্রান্সক্রিপশন পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন’ পদ্ধতিতে মুখের ভিতর বা নাকের মধ্যে থেকে লালা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। ল্যাবরেটরি- ভিত্তিক এই পরীক্ষা সময়সাপেক্ষ। জেলা ও কলকাতায় পরীক্ষার নিরিখে সংক্রমণের হারে ফারাক তাকায় প্রশ্ন উঠছে, তবে কি করোনার নমুনা সংরক্ষণে বা পরীক্ষায় কোনও ত্রুটি থাকছে!

দেখা যাচ্ছে, ৫ সেপ্টেম্বর মেডিক্যালে ৪২৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। ৬৫ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। ২২ অগস্ট মেডিক্যালে ৩১৭ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩৯ জন পজ়িটিভ।

২৫ অগস্ট মেডিক্যালে ২৫৬ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে ৯৪ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে। অন্য দিকে, ২৯ অগস্ট এসএসকেএমে জেলার যে ১,০৪২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল, তার মধ্যে ২২ জন পজ়িটিভ হয়েছেন। ৩১ অগস্ট ৬৪৫ জনের মধ্যে পজ়িটিভ হয়েছেন ২২ জন। আর ২ সেপ্টেম্বর এসএসকেএমে জেলার ৪৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। মাত্র ৪ জনের পজ়িটিভ রিপোর্ট এসেছে।

কোনও কোনও দিন আবার সংক্রমণের হার শূন্য! যেমন ৪ সেপ্টেম্বর এসএসকেএমে জেলার ৭১৫ জনের নমুনা পরীক্ষা হলেও কেউ পজ়িটিভ হননি। ২৮ অগস্টও যে ৩০৩ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল, তাঁরা সকলেই করোনা নেগেটিভ হয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে পাঁচ হাজার ছাড়িয়েছে। রবিবার পর্যন্ত করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৫,৬৬৪। এরমধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৪,৩৭৭ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১,২২৯ জন। অনেকেই হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। জেলাস্তরের টাস্কফোর্সের এক সদস্য বলেন, ‘‘সংক্রমণের হার প্রায় দিনই ১০ শতাংশের নীচেই থাকছে। কখনও খানিক বাড়ছে। তবে উদ্বেগের কিছু নেই। জেলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement