Haldia

স্বাস্থ্যবিধি শিকেয়, নির্বিকার প্রশাসন

মহকুমায় বাজারগুলিতে এখনও থিকথিকে ভিড়। চায়ের দোকানে গায়ে গা লাগিয়ে বসে চা খেতে খেতে আড্ডাও চলছে দেদার

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হলদিয়া ও পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০২০ ০০:০১
Share:

বেপরোয়া: হলদিয়ার ব্রজলালচকে মুখে মাস্ক ছাড়াই চলছে আড্ডা। রবিবার সন্ধ্যায়। নিজস্ব চিত্র

লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। ৩১ জুলাই পর্যন্ত রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। জেলায় বেশ কয়েকটি অঞ্চলকে গণ্ডিবদ্ধ অঞ্চল হিসেবে চিহ্নিত করেছে জেলা প্রশাসন। তবু হুঁশ ফেরেনি মানুষের।

Advertisement

মহকুমায় বাজারগুলিতে এখনও থিকথিকে ভিড়। চায়ের দোকানে গায়ে গা লাগিয়ে বসে চা খেতে খেতে আড্ডাও চলছে দেদার। গোটা মহাকুমায় নতুন করে ১৭ জন আক্রান্ত। শনিবার আক্রান্ত হয়েছেন ভবানীপুরের এক আশাকর্মী। উল্লেখ্য, এর আগে তাঁর ছেলে এবং স্বামীর করোনা পজেটিভ হয়েছিল। প্রশাসনের তরফে বারবার সতর্ক করা হয়েছে সরাসরি পারস্পরিক সংস্পর্শ এড়ানোর জন্য। তা সত্ত্বেও দেখা যাচ্ছে সামাজিক দূরত্ব পালন করা হচ্ছে না কোনও জায়গাতেই। রাস্তাঘাটে মানুষের ভিড়। সিটি সেন্টার, ব্রজলাল চক, চৈতন্যপুর, দুর্গাচক টাউনশিপে মানুষের ভিড় চোখে পড়ার মতো।

সাধারণ মানুষের অভিযোগ, আশপাশের জেলাগুলিতে পুলিশ কড়া হাতে পরিস্থিতি সামাল দিলেও হলদিয়া মহাকুমায় পুলিশ প্রশাসনের তেমন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে মাস্ক না পরেও দিব্যি রাস্তাঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন লোকজন। স্থানীয় বাসিন্দা অরূপ সাহা বলেন, ‘‘শুরুর দিকে যেমন পুলিশ সবকিছু কড়া হাতে দমন করেছিল এখনও যদি কয়েকটা দিন সেই ভাবেই পুলিশের টহলদারি চলতো তা হলে মানুষ সামাজিক দূরত্ব বৃদ্ধি ও মাস্ক পরার ক্ষেত্রে গাফিলতি করার সুযোগ পেত না। তাতে করোনা সংক্রমণের পরিমাণ কিছুটা হলেও কমতো।’’

Advertisement

প্রতিদিনই আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ায় আতঙ্ক বাড়ছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। যদিও সচেতনতা সেই তিমিরেই। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হলদিয়ার একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হস্টেলকে ‘সেফ হোম’ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে। বড়মা হাসপাতালে যে সমস্ত উপসর্গহীন রোগী রয়েছেন তাঁদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে। বড়মা হাসপাতালে রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সেই জন্য শয্যা সংকুলান হচ্ছে না। তাই যাঁদের সেরকম কোনও উপসর্গ নেই তাঁদের ‘সেফ হোমে’ রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিদিন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা সেখানে যাবেন স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে। কোনও রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি হলে তাঁকে বড়মা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।

হলদিয়া মহকুমা পুলিশ আধিকারিক তন্ময় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুলিশের পক্ষ থেকে নজরদারি চালানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে আরও কড়া নজরদারি চালানো হবে।’’

অন্যদিকে গন্ডিবন্ধ এলাকাতেই রবিবার প্রতিবাদ সভা করতে দেখা গেল তৃণমূলকে।

মিড-ডে মিলের চাল চুরির অভিযোগে কয়েকদিন আগে কোলাঘাটের বৈষ্ণবচক মহেশচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের এক অশিক্ষক কর্মচারীর সঙ্গে মারপিট হয় নির্দল পঞ্চায়েত সদস্য মানব সামন্তর। ঘটনায় উভয়েই কোলাঘাট বিট হাউস থানায় পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। এদিন ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এবং মানব সামন্তর গ্রেফতারির দাবিতে ভোড়দহ বাজারে কোলাঘাটের প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরীর নেতৃত্বে প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। করোনা সংক্রমণের কারণে বৈষ্ণবচক এলাকাটি এই মুহূর্তে লকডাউনের আওতায়। গণ্ডিবদ্ধ এলাকায় মাইক দিয়ে প্রতিবাদ সভা করার বিরুদ্ধে সরব তৃণমূলের একাংশ।

পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘শহরের যে সব জায়গায় করোনা ধরা পড়েছে সেই সব জায়গায় লকডাউন চলছে। শহরের সর্বত্রই পুলিশি টহল চলছে। করোনা সুরক্ষা বিধি বিঘ্নিত হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।’’

পাল্টা তৃণমূল নেতা মদন মোহন মিশ্রর দাবি, ‘‘আমরা যে জায়গায় প্রতিবাদ সভা করি সেটিকে ভোড়দহ বাজার বলা হলেও সেটি আসলে দূর্বাচটি বাজার। আমরা পুলিশের অনুমতি নিয়েই সভা করেছি। যাঁরা অভিযোগ করছেন তাঁরা দলের শত্রু।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement