প্রতীকী ছবি।
সংক্রমণ কমছে ঘাটালে। আরটিপিসিআর ও অ্যান্টিজেন-দুই ক্ষেত্রেই কমছে সংক্রমিতের সংখ্যা।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, গত দশ দিনে ঘাটাল মহকুমার ৯০ জন সংক্রমিত হয়েছেন। সেখানে অক্টোবরের প্রথম দশদিনে আক্রান্ত হয়েছিলেন ১২০ জন। সংক্রমণ কমার এই হারে ধন্দে রয়েছেন চিকিৎসকেরা। কারণ, হাসপাতালের ফিভার ক্লিনিকগুলিতে ভিড় আগের তুলনায় বাড়ছে। জ্বর-কাশি নিয়ে অনেকে আসছেন। কিন্তু হাসপাতালে তো এখন পরীক্ষা সবার হচ্ছে না। সাধারণ মানুষের আবার পরীক্ষার আগ্রহ অনেকটা কমেছে। ফলে সংক্রমণ কমল না বাড়ল, সেটা জানা যাবে কোথা থেকে!
চিকিৎসকদের অনেকেই মনে করিয়ে দিয়েছেন, এই মুহুর্তে করোনা নিয়ে সাধারণ মানুষের মাথাব্যথা ততটা নেই। দুর্গাপুজোর পর পর স্বাভাবিক জনজীবনে অনেকটা বদল এসেছে। কেটে গিয়েছে আতঙ্ক। তারজেরে বাড়ছে সামাজিক দূরত্ববিধি, মাস্ক ব্যবহারে অনীহা। হাট-বাজার গুলিতে ঠাসা ভিড়। অনেক ক্ষেত্রে সেখানে মাস্ক ছাড়াও কেনাবেচা চলছে। ঘাটাল মহকুমা জুড়েই মিটিং-মিছিল অব্যাহত। হোটেল-রেস্তরাঁরা গুলিতেও তুলনায় ভিড় বেড়েছে। ঘাটাল শহর সহ মহকুমার সবর্ত্রই অনেকেই মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অনেকটা যেন আগের স্বাভাবিক জনজীবনে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছেন আমজনতা। সংক্রমণের লেখচিত্র কমানোর ক্ষেত্রে এই প্রবণতা যথেষ্ট উদ্বেগের।
স্বাস্থ্য দফতরের এক সূত্রের খবর, এই মুহুর্তে হাসপাতালগুলিতে আরটিপিসিআরের মাধ্যমে করোনা পরীক্ষা হচ্ছে। ক্যাম্পে অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়। ঘাটাল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল-সহ মহকুমার পাঁচটি গ্রামীণ হাসপাতালেই আরটিপিসিআরের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু পরীক্ষা আগের তুলনায় অনেকটা কমেছে। ব্লক গুলিতে মাসে দু’তিনটি করে ক্যাম্প হচ্ছে। উল্টোদিকে এখন প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে আরটিপিসিআর পরীক্ষাও হচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতরের এক পরিসংখ্যান বলছে, কয়েকদিন আগে গ্রামীণ হাসপাতাল গুলিতে দৈনিক ৪০-৪৫ জনের পরীক্ষা হতো। এখন সেখানে গড়ে ৮-১০ জনের পরীক্ষা হয়। তার মধ্যে দু’তিন জনের পজ়িটিভ আসছে। ক্যাম্প গুলিতে এখন ২৫-৩০ জনের অ্যান্টিজেন পরীক্ষা হয়। সেখানে ৫-৭ জনের পজ়িটিভ বেরোচ্ছে।
ঘাটালের এক প্রবীণ চিকিৎসকের দাবি, “যত সংখ্যক পরীক্ষা হচ্ছে, সেই নিরিখে প্রকোপ কমছে, এটা ঠিক। তা বলে করোনার ভয় কেটে গিয়েছে, এটা ভাবলে ভুল হবে। হাসপাতালগুলিতে পরীক্ষা কম হচ্ছে। তা হলে সংক্রমণ কমল কোথায়?” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাই চন্দ্র মণ্ডল মানলেন, “কিছু ক্ষেত্রে প্রকোপ কমেছে।তবে আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে। মাস্ক ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে। ক্যাম্পের সংখ্যা আরও বাড়ানো হচ্ছে।”