প্রতীকী ছবি।
পরিকাঠামোগত খামতি নিয়েই চালু হচ্ছে ঝাড়গ্রামের নতুন করোনা হাসপাতাল। সব ঠিকঠাক থাকলে আগামিকাল, শনিবার থেকেই ওই হাসপাতালে কাজ শুরু হওয়ার কথা।
সম্প্রতি জেলা স্বাস্থ্য দফতর ওয়েস্টবেঙ্গল মেডিক্যাল সার্ভিসেস কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষের (ডব্লিউবিএমএসসিএল) কাছে করোনা হাসপাতালের পরিকাঠামোগত কাজ দ্রুত সেরে ফেলার অনুরোধ করেছে। কারণ, আগামিকাল, শনিবার থেকেই ১১ জুলাই থেকে জেলার করোনা হাসপাতালে পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তার নির্দেশক্রমে ঝাড়গ্রাম হাসপাতাল চত্বরের নবনির্মিত নাইট শেল্টার ভবনে ৭৫ শয্যার করোনা হাসপাতাল করা হয়েছে। কিন্তু চারতলা ভবনটিতে লিফ্ট নেই। নেই র্যাম্প। ভরসা সরু সিঁড়ি। ফলে রোগীদের তিন তলা ও চারতলার ওয়ার্ডে পৌঁছনোর জন্য স্ট্রেচারই ভরসা। তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ওই ভবনে লিফ্ট করার জন্য পূর্ত দফতর বাজেট ধার্য তৈরি করছে। তবে লিফ্ট তৈরি করতে সময় লাগবে। করোনা হাসপাতালের ৭৫টি শয্যার মধ্যে দু’টি শয্যা যুক্ত ডায়ালিসিস ইউনিট ও ৫ শয্যাযুক্ত সিসিইউ ওয়ার্ডও তৈরি করা হয়েছে। সিসিইউতে তিনটি ভেন্টিলেটরের ব্যবস্থাও রয়েছে। দোতলায় থাকছে ডায়ালিসিস ইউনিট এবং সিসিইউ ওয়ার্ড। তিন তলা ও চার তলায় মিলিয়ে মিশেয়ে থাকছে পুরুষ ও মহিলা রোগীদের পৃথক ওয়ার্ড।
চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, সিসিইউ বিভাগে কেন্দ্রীয় ভাবে অক্সিজেন সরবরাহের ব্যবস্থা নেই। এরফলে ভেন্টিলেটরে থাকা সঙ্কটজনক রোগীর ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে। হাসপাতালের এক তলায় অপারেশন থিয়েটর, লেবার রুম, ইউএসজি ও শ্বাসকষ্টের রোগীদের পৃথক ওয়ার্ড থাকছে। করোনা হাসপাতালে যে সব চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মী পরিষেবা দেবেন, তাঁদের হাসপাতাল চত্বরে থাকার কোনও ব্যবস্থা এখনও অবধি করে ওঠা যায়নি। করোনা হাসপাতালের পৃথক শবাগারও এখনও তৈরি হয়নি। ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটির সুপার ইন্দ্রনীল সরকারকেই করোনা হাসপাতালের সুপারের বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। রাতের বেলা আলো ঝলমলে হাসপাতাল ভবনটি শহরের অন্যতম দ্রষ্টব্য হয়ে উঠেছে। তবে করোনা হাসপাতাল ভবনের গা-ঘেঁষে মেন রোড ও হসপিটাল রোডের ধারে রয়েছে সার-সার দোকানপাট। ফলে শঙ্কায় রয়েছেন একাংশ বাসিন্দাও। এলাকাবাসীদের দাবি, পথচারী ও স্থানীয়দের নিরাপত্তার দিকটাও ভেবে দেখুক স্বাস্থ্য দফতর। কারণ কোনও রোগী তিন তলা বা চারতলা থেকে স্পর্শ করা কোনও জিনিসপত্র নিচে ছুড়ে ফেললে তা রাস্তার ধারের দোকানে অথবা পথচারীর গায়েও পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা করোনা হাসপাতাল নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘’১১ জুলাই ঝাড়গ্রাম করোনা হাসপাতালটি চালু করার কথা জানিয়েছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। হাসপাতালে যথাযথ পরিষেবা দেওয়ার পরিকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। আতঙ্কের কিছু নেই।’’