প্রতীকী ছবি
পশ্চিম মেদিনীপুরের দুই করোনা হাসপাতালে পৌঁছল হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন। জেলার তিন সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল এবং মহকুমা হাসপাতালেও যুদ্ধকালীন তৎপরতায় ওই ওষুধ পৌঁছনো হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। এই তিন হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ড রয়েছে। জানা যাচ্ছে, প্রথম পর্যায়ে জেলার এই পাঁচ হাসপাতালে ‘করোনা-প্রতিরোধী’ ওই ওষুধ দেওয়া হয়েছে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশেই জেলার এই পদক্ষেপ।
করোনা চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। আইসিএমআর-এর নির্দেশ মেনে জেলাগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। জেলার দুই করোনা হাসপাতাল-সহ পাঁচ হাসপাতালে কি হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ করা হয়েছে? পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে যে পদক্ষেপ করার করা হয়েছে।’’ জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের স্বীকারোক্তি, ‘‘রাজ্য থেকে এক নির্দেশ এসেছে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী শুক্রবার প্রথম পর্যায়ে জেলার পাঁচ হাসপাতালে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন সরবরাহ করা হয়েছে।’’
জেলায় কি এই ওষুধ পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে? সদুত্তর এড়িয়ে জেলার ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলায় যতটুকু হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দরকার তা মজুত রয়েছে।’’ সূত্রের খবর, শীঘ্রই রাজ্য থেকে এই ওষুধ জেলায় আরও সরবরাহ করা হতে পারে।
এখন হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে হাইড্রক্সিক্লোরোকুইনের চাহিদা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দেশে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে ভারত থেকে আমদানি করছেন এই ওষুধ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক স্পষ্ট করে দিয়েছে, ক্ষেত্র বিশেষে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে করোনা রোগী, রোগীর সংস্পর্শে আসা লোকজন, করোনা রোগীর চিকিৎসায় নিযুক্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য এই ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক জানিয়েছে, ক্ষেত্র বিশেষে করোনা রোগীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন দেওয়া হচ্ছে। করোনা চিকিৎসায় যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে আইসিএমআর-ও।
জানা যাচ্ছে, নির্দেশিকায় ডোজও নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যাঁরা করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা করছেন, তাঁরা প্রথম দিনে দু’টো ট্যাবলেট খেতে হবে, খাবার খাওয়ার পরে। পরবর্তী সাত সপ্তাহে প্রতি সপ্তাহে একটি করে ট্যাবলেট খেতে হবে। অন্য দিকে, করোনা আক্রান্তদের সংস্পর্শে আসা লোকজনেরা যাঁদের কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে, তাঁদেরও এই ওষুধ প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসেবে দেওয়া যাবে। এ ক্ষেত্রে প্রথম দিনে দু’টো ট্যাবলেট খেতে হবে, খাবার খাওয়ার পরে। পরবর্তী তিন সপ্তাহে সপ্তাহপিছু একটি করে ট্যাবলেট খেতে হবে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘রাজ্যের নির্দেশিকায় আইসিএমআর- এর পরামর্শের কথা উল্লেখ রয়েছে। ওই পরামর্শ মেনেই এই নির্দেশ।’’ একাংশ চিকিৎসকের দাবি, করোনা রোগীদের চিকিৎসায় হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন ভাল কাজ দেয়। খোলাবাজারে অবশ্য এই ওষুধ এখন প্রায় অমিলই।