ফাইল চিত্র
রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে প্রথম এখানেই করোনা পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর)। কিটও চলে এসেছে। তবু এখনও করোনা পরীক্ষাকেন্দ্র চালু হয়নি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ফলে, পরীক্ষার জন্য জেলা থেকে এখনও নমুনা পাঠাতে হচ্ছে সেই কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা নাইসেডেই (ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব কলেরা অ্যান্ড এন্টেরিক ডিজিজেস)। মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওই পরীক্ষাকেন্দ্র চালু করার ক্ষেত্রে গড়িমসি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
কিট চলে এসেছে। তবু কেন এখনও মেদিনীপুর মেডিক্যালে করোনা পরীক্ষা কেন্দ্র চালু হচ্ছে না? মেদিনীপুর মেডিক্যালের অধ্যক্ষ পঞ্চানন কুণ্ডুর জবাব, ‘‘কিট এসেছে। প্রয়োজনীয় সবদিক দেখে এ বার চালু হবে।’’ মেডিক্যালের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রধান পার্থসারথি শতপথীর মন্তব্য, ‘‘আমি এ ব্যাপারে কিছু বলব না। আসলে আমি এ নিয়ে কিছু বলার মতো জায়গায় নেই!’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘যত তাড়াতাড়ি সম্ভব মেদিনীপুর মেডিক্যালে করোনা পরীক্ষা চালু হবে বলেই জানি।’’ মেডিক্যালের এক সূত্রের দাবি, কিট এসেছে। তবে প্রয়োজনীয় আরও কিছু সরঞ্জাম আসা বাকি রয়েছে। তা এলেই ওই পরীক্ষা কেন্দ্র চালু হবে। ওই সূত্র জানাচ্ছে, ল্যাবরেটরি অ্যাসিস্ট্যান্টদের নিরাপত্তার দিকটিও নিশ্চিত করা হচ্ছে। মেদিনীপুর মেডিক্যালে মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের ল্যাবরেটরি রয়েছে। করোনা পরীক্ষার জন্য ওই ল্যাবরেটরিই ব্যবহৃত হবে। প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়া হয়েছে। মেডিক্যালের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘এখানকার রিসার্চ ল্যাবরেটরি উন্নতমানেরই। তাই আইসিএমআর- এর অনুমোদন পেতে সুবিধে হয়েছে। ওরা সবদিক দেখেই এখানে করোনা পরীক্ষার অনুমোদন দিয়েছে।’’
মেদিনীপুর মেডিক্যালে ওই পরীক্ষা কেন্দ্র চালু হলে দক্ষিণবঙ্গের অনেকগুলি জেলা উপকৃত হবে। বিশেষ করে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলি। যেমন পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর প্রভৃতি। এই সমস্ত জেলাই এখন করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা নাইসেডে পাঠায়। মেডিক্যালের এক সূত্রের দাবি, ইতিমধ্যে এখানকার চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের করোনার উপসর্গ থাকা রোগীর নমুনা সংগ্রহের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসকদের অনেকে মনে করিয়ে দিচ্ছেন, শুরু থেকেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) বলে আসছে, নোভেল করোনাভাইরাস বা কোভিড- ১৯ সংক্রমণের নির্ধারণের প্রশ্নে একমাত্র উপায় হল নমুনা পরীক্ষাই। সন্দেহভাজনের নমুনা পরীক্ষাই চূড়ান্তভাবে জানাতে পারে, কোনও ব্যক্তি সংক্রমিত কি না। সাধারণত আইসোলেশনে থাকা কোনও ব্যক্তির ২ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে উপসর্গ দেখা দেয়। জ্বর, সর্দি, কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ দেখা দিলে একমাত্র তখনই পরীক্ষা করে দেখার প্রয়োজন রয়েছে।’’ সূত্রের খবর, পরীক্ষা কেন্দ্র চালুর আগে প্রাথমিক একটি পরীক্ষা দিতে হয় হাসপাতালকে। নমুনা পরীক্ষা করে তার রিপোর্ট পাঠাতে হয়। সেই পরীক্ষায় উতরেছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল। এখানকার পরীক্ষা রিপোর্টে সন্তোষ প্রকাশ করেছে আইসিএমআর। ওই সূত্র জানাচ্ছে, আপাতত করোনা পরীক্ষার জন্য ১০০টি কিট এসেছে এখানে।