হাজিরার জন্য লাইন। নিজস্ব চিত্র
ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। রেলমন্ত্রকের পক্ষ থেকে জারি করা হয়েছে নির্দেশিকা। ওই নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে বায়োমেট্রিকে কর্মীদের হাজিরা নেওয়া যাবে না। তবে খড়্গপুর রেল কারখানায় বায়োমেট্রিকে হাজিরার পদ্ধতি বন্ধ করা হয়নি!
সোমবার বন্ধ থাকে খড়্গপুর রেল কারখানা। মঙ্গলবার ছিল হোলির ছুটি। দু’দিনের ছুটি কাটিয়ে বুধবার সচল হয়েছে রেল কারখানা। কিন্তু এ দিন কারখানায় হাজিরা দেওয়ার সময়েই ক্ষোভে ফেটে পড়েন কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে রেলমন্ত্রক হাজিরা সংক্রান্ত যে নির্দেশিকা দিয়েছে তা মানা হচ্ছে না। ৬ মার্চ রেলমন্ত্রক ও রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে এক নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল, করোনা সংক্রমণের সতর্কতায় ৩১মার্চ পর্যন্ত রেলের কর্মীদের বায়োমেট্রিকে হাজিরা নেওয়া যাবে না। এর জন্য হাজিরা খাতা ব্যবহার করতেও বলা হয়েছে। অথচ ৪দিন পরেও রেল মন্ত্রক ও রেল বোর্ডের ওই নির্দেশিকা উপেক্ষা করে খড়্গপুর রেল কারখানায় বায়োমেট্রিকেই হাজিরা দিতে বাধ্য করা হচ্ছে বলে অভিযোগ। ঘটনাটি নিয়ে সরব হয়েছে রেলের কর্মী সংগঠনও। যদিও কারাখানা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত ওই নির্দেশিকা জোনাল অফিস থেকে তাদের হাতে পৌঁছয়নি।
রেল কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিটিশ জমানায় গড়ে ওঠা এই কারখানায় কর্মী সংখ্যা ক্রমেই কমছে। এত বছর খাতায় সই করে হাজিরা দিতে হত কর্মীদের। কিন্তু মাস চারেক আগে কারখানায় বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা চালু হয়। এখন কারখানার প্রায় ৩০টি শপের প্রতিটিতে এই বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে হাজিরা দিতে হয়। যদিও বায়োমেট্রিক চালুর পর থেকেই নানা অভিযোগে সরব হতে শুরু করেন রেলকর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, বায়োমেট্রিকে এভাবে উপস্থিতি দিতে গিয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে। এমনকি সময়ে অফিসে পৌঁছেও লাইনের জেরে বায়োমেট্রিকে হাজিরা দিতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। তবে গত কয়েকমাসে এভাবেই অভ্যস্ত হয়ে উঠছিলেন রেল কারখানার কর্মীরা। তবে এখন রেলমন্ত্রকের নির্দেশিকা কার্যকর না করায় নতুন করে বায়োমেট্রিক বন্ধের দাবি তুলেছে কর্মীরা। পাশে দাঁড়িয়েছে কর্মী সংগঠন। কারখানার কর্মী তথা দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মেনস ইউনিয়নের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক অজিত ঘোষাল বলেন, “কারখানায় এভাবে বায়োমেট্রিক চালু করা নিয়েই কর্মীদের আপত্তি ছিল। কিন্তু বায়োমেট্রিক চালু হয়েছে। কিন্তু এখন যখন রেলমন্ত্রক করোনার সতর্কতায় নির্দেশিকা জারি করেছে তখন বায়োমেট্রিক বন্ধ হওয়া উচিত। তাই সেটা কারখানা কর্তৃপক্ষ না করায় কর্মীদের ক্ষোভ স্বাভাবিক।” অবশ্য বিষয়টি নিয়ে খড়্গপুর রেল কারখানার চিফ ওয়ার্কশপ ম্যানেজার শুভেন্দু চৌধুরী বলেন, “যে নির্দেশিকা জারি হয়েছে তা জোনাল অফিস থেকে আমাদের কাছে আসেনি। যতক্ষণ ওই নির্দেশিকা আমরা সরকারিভাবে হাতে না পাচ্ছি ততক্ষণ এই বায়োমেট্রিক বন্ধ করতে পারব না।”