প্রতীকী ছবি।
করোনা আক্রান্তদের দ্রুত চিহ্নিত করার উপর জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার। করোনা মোকাবিলার ক্ষেত্রে আক্রান্তদের চিহ্নিত করে তাঁদের দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে ধরা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে জেলার শহরের পাশাপাশি গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের করোনা পরীক্ষার জন্য এবার উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতেও শিবির করা হচ্ছে।
করোনা উপসর্গ ছাড়া অন্য যে সব ব্যক্তি পরীক্ষা করাতে চান, তাঁদেরও পরীক্ষার ব্যবস্থা করার জন্য ব্লক স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বর্তমানে জেলা হাসপাতাল, সব মহকুমা হাসপাতাল, গ্রামীণ হাসপাতাল এবং ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে করোনার র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া, করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের আরটিপিসিআর টেস্টের জন্য নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতায় পাঠানো হচ্ছে।
গ্রামীণ এলাকায় কর্মরত স্বাস্থ্য দফতরের আশা এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা করোনা উপসর্গ বা অন্য কোনও অসুস্থতায় থাকা ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে তাঁদের চিকিৎসার পরামর্শ দিচ্ছেন। করোনা উপসর্গ থাকাদের করোনা পরীক্ষা করার জন্য ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ার পরামর্শ দেন। কিন্তু গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ করোনা উপসর্গ থাকা সত্বেও ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে করোনা পরীক্ষা করতে চান না বলে অভিযোগ। কারণ হিসাবে উঠে আসছে যে, একাংশ বাসিন্দা বয়সজনিত কারণে দূরবর্তী ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেতে অসুবিধায় পড়েন, আবার একাংশ বাসিন্দা করোনা আক্রান্ত হলে সামাজিক সমস্যার মুখে পড়তে হবে ভেবে এলাকারই গ্রামীণ চিকিৎসকের কাছে যান। এর ফলে ওই সব বাসিন্দারা গুরুতর অসুস্থ হলে ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা হাসপাতালে যান। তখন চিকিৎসার ক্ষেত্রে অনেকটাই সমস্যা বাড়ে।
এমন পরিস্থিতিতে করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের দ্রুত করোনার পরীক্ষার জন্য পঞ্চায়েত এলাকায় থাকা সদর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে শিবির করার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ২২৩টি সদর উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। আশা কর্মী এবং স্বাস্থ্য কর্মীরা (এএনএম) নিয়মিত উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে যান। ওই সদর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলিতে করোনার পরীক্ষার শিবিরের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শিবির আয়োজনের আগে আশা ও স্বাস্থ্য কর্মীরা করোনা উপসর্গযুক্ত বাসিন্দাদের এবং আগ্রহী ব্যক্তিদের তালিকা তৈরি করবেন। এভাবে ১০০-১৫০ জন বাসিন্দাদের নিয়ে সদর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষার শিবির আয়োজন হচ্ছে। বিডিও, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিরা আলোচনা করে শিবিরের স্থান এবং তারিখ নির্ধারণ করছেন। এরপর ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের দল গিয়ে করোনা পরীক্ষার শিবির করছেন।
শিবিরে র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্ট ছাড়াও আরটিপিসিআর টেস্টের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, জেলায় এখনও পর্যন্ত ৬৫ হাজার ৫০০ জনের আরটিপিসিআর টেস্ট এবং ১৪ হাজার ৯৭৬ জনের র্যা পিড অ্যান্টিজেন টেস্ট হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল, ‘‘করোনা উপসর্গ থাকা ব্যক্তি ছাড়াও যাঁরা করোনা পরীক্ষা করাতে চান, তাঁদের পরীক্ষা করানোর ব্যবস্থা হচ্ছে। এর ফলে বয়স্ক এবং প্রত্যন্ত এলাকার বাসিন্দাদের সুবিধা হচ্ছে।’’