এমনই নম্বর প্লেট ঘিরে দেখা দিয়েছে বিতর্ক। নিজস্ব চিত্র
ব্যক্তিগত মোটর সাইকেলে লাগানো রয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রতীক বা সেনার লোগো। আর তা নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন গাড়ির মালিকেরা। অভিযোগ, এমনই ছবি দেখা যাচ্ছে এগরা মহকুমার বিভিন্ন এলাকায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, পটাশপুর, খড়াই বাজার, এগরা কসবা এলাকায় প্রতিদিন এমন বহু মোটরবাইক চলাচল করে, যেগুলির সামনে বা পিছনের নম্বর প্লেটে লাগানো রয়েছে রাষ্ট্রীয় প্রতীক। অভিযোগ, অনেক মোটর সাইকেলের মালিক সেনাবিভাগে বা পুলিশে কাজ করেন।
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, গাড়িতে ব্যবহার কারার জন্য খুব সহজেই স্থানীয় বাজারের একাধিক দোকান থেকে অশোক স্তম্ভের রেপ্লিকা পাওয়া যায়। খুব কম টাকায় রকমারি সাইজের ওই প্রতীক বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতারা চাইলেই সেগুলি দোকান থেকে কিনে মোটার সাইকেলে বসিয়ে নিচ্ছেন। এ ব্যাপারে এক এগরা সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এক দোকানের কর্মীর কথায়, ‘‘অশোক স্তম্ভের লোগো বা রেপ্লিকা ৭০-৮০ টাকা ধরে বিক্রি হয়। এটা যে বেআইনি, তা জানতাম না।’’ আর এক দোকানদারের বক্তব্য, ‘‘অনেকে নিজেকে সরকারি বা সেনা কর্মী বলে জাহির করতে এই ধরনের প্রতীক ব্যবহার করেন।’’
এ নিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সেনা কর্মী বলেন, ‘‘শুনেছি সশস্ত্র সেনাবাহিনীর কর্মী হলে অশোক স্তম্ভ লাগানো বা এই ধরনের সেনাবাহিনীর লোগো মোটরবাইকে লাগানো যায়। যাঁরা সেনা বাহিনীতে কাজ করেন, তাঁরা অনেকে এই ধরনের লোগো গাড়িতে লাগিয়ে ঘুরে বেড়ান। তাই আমিও আমার মোটর বাইকে লাগিয়েছি। জানি না এটা কতটা আইনসিদ্ধ।’’
রাষ্ট্রীয় প্রতীকের এমন ‘অপব্যবহার’ নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের না হলেও, স্থানীয়দের অনেকেরই প্রশ্ন, এভাবে কী রাষ্ট্রীয় প্রতীক ব্যবহার করা যায়?
স্টেট এমব্লেম অফ ইন্ডিয়া (প্রহোবিশন অফ ইমপ্রপার ইউজ) অ্যাক্ট অনুসারে, একজন সাধারণ নাগরিক কোনও ভাবেই রাষ্ট্রের জাতীয় প্রতীক কোনও স্থানে বা কোনও যানবাহনে লাগাতে পারেন না। নিয়ম ভাঙলে আর্থিক জরিমানার পাশাপাশি কারাদণ্ডও হতে পারে।
রাষ্ট্রীয় প্রতীকের এ ধরনের ব্যবহার প্রসঙ্গে এগরার মহকুমাশাসক অপ্রতীম ঘোষ বলেন, ‘‘এই ধরনের কাজ সম্পূর্ণ সংবিধান বিরুদ্ধ। পুলিশ প্রশাসনকে এ বিষয়ে বাড়তি নজরদারি চালনোর জন্য বলা হবে। আগামীদিনে এই সকল যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসুর কথায়, ‘‘এভাবে ব্যক্তিগত গাড়িতে রাষ্ট্রীয় প্রতীক লাগানো যায় না। প্রয়োজনে পদক্ষেপ করা হবে।’’