Tree Cutting Case

কাটার আগে চিহ্নিত গাছ, বিতর্কের মুখে বিকল্পের খোঁজ

গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে বন দফতর। প্রশাসনের তরফে ডিপিআর (ডিটেইলড প্রজেক্ট রিপোর্ট)-এর দায়িত্ব দেওয়া হয় বন ও পূর্ত দফতরকে। রং ও নম্বরে চিহ্নিতও করা হয় গাছগুলিকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দিঘা শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:০৫
Share:

কাটার জন্য গাছ চিহ্নিত করা হয়ছে। —নিজস্ব চিত্র।

পুজোর পরেই সৈকত নগরী দিঘায় জগন্নাথ ধামের উদ্বোধন হবে এবং আগামী বছর থেকে রথের চাকা গড়াবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই রথের পথ প্রশস্ত করতেই পাঁচশোর বেশি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছে। দিঘায় রাস্তার ধারে সেই সব গাছের গায়ে পড়ছে হলুদ রঙের পোঁচ, সঙ্গে নম্বরও। যদিও সবুজ ধ্বংসের এই তোড়জোড় ঘিরে বিতর্ক শুরু হওয়ার পরে দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ (ডিএসডিএ) জানিয়েছে, যত সম্ভব গাছ বাঁচিয়ে বিকল্প পদ্ধতিতে রাস্তা সম্প্রসারণ করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবু গাছ চিহ্নিত হয়ে যাওয়ার পরে ডিএসডিএ-র বক্তব্য নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।

Advertisement

ওল্ড দিঘার মেরিন অ্যাকোয়ারিয়াম থেকে হাসপাতাল ও দিঘালি (সরকারি অতিথি নিবাস) হয়ে নিউ দিঘায় নির্মীয়মাণ জগন্নাথ মন্দির পর্যন্ত ১১৬বি জাতীয় সড়কের দু’দিকে যে ৫২৪টি গাছ কাটা হবে, সেগুলিকে হলুদ রং ও নম্বর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। ঝাউ ছাড়াও সেখানে রয়েছে দেবদারু, আকাশমণি, বটের মতো বড় সব গাছ। পেশায় চিকিৎসক স্থানীয় এক প্রবীণ বাসিন্দা বলছেন, ‘‘কম করে ৪০-৫০ বছর বয়স হবে গাছগুলোর।’’ তাই নতুন করে গাছ লাগালেও তাতে ক্ষতি পূরণ কতটা হবে, প্রশ্ন থাকছেই।

গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছে বন দফতর। প্রশাসনের তরফে ডিপিআর (ডিটেইলড প্রজেক্ট রিপোর্ট)-এর দায়িত্ব দেওয়া হয় বন ও পূর্ত দফতরকে। রং ও নম্বরে চিহ্নিতও করা হয় গাছগুলিকে। তার পরেই এই সিদ্ধান্ত নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। শনিবার গোটা এলাকা ঘুরে দেখেন পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তার পরই বিকল্প চিন্তাভাবনা শুরু হয়েছে বলে সূত্রের দাবি। কাঁথির মহকুমাশাসক তথা ডিএসডিএ-র দায়িত্বপ্রাপ্ত এগজিকিউটিভ অফিসার শৌভিক ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘পূর্ত দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আপাতত গাছ না কেটে রাস্তা সম্প্রসারণ করতে হবে। বদল করা হচ্ছে আগের ডিপিআর।’’

Advertisement

পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, ১১৬বি জাতীয় সড়ক থেকে নির্মীয়মাণ মন্দির পর্যন্ত রাস্তা ১৪.৬০০ মিটার চওড়া করতে হবে। তার পর ফুটপাত হবে। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, কালো পিচের অংশের চওড়া কমিয়ে ১১.৭৫০ মিটার করার। তবে গাছ বাঁচাতে হলে পেপার ব্লক দিয়ে মুড়ে ফুটপাত করতে হবে। পূর্ত দফতর (সড়ক)-এর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মিঠুন রাউল বলেন, ‘‘জেলা প্রশাসনের তরফে গাছ বাঁচিয়ে রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য মৌখিক প্রস্তাব এসেছে। আগামী শনিবারের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে।’’

ডিএসডিএ জানাচ্ছে, গাছ কাটার সিদ্ধান্ত রদ হলেও তারা বৃক্ষরোপণ করবে। দিঘার দু’টি মৌজায় দেড় হাজার চারা রোপণের জন্য ঠিকাদার সংস্থাকে বরাত দেওয়া হচ্ছে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের মতে, ‘‘২৫-৩০ বছরের মধ্যে দিঘা সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে। অবিলম্বে সৈকত শহরকে বাঁচাতে যথাযথ পরিকল্পনা দরকার।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement