প্রতীকী ছবি।
কাঁথি সসম্মানে পাশ টেস্টে। ডাহা ফেল তমলুক।
বিশ্বকর্মা পুজোর ভাসানের দিন পূর্ব মেদিনীপুরের দুই প্রান্তের ‘শব্দ-চিত্র’ সম্পূর্ণ বিপরীত। কাঁথি শহরের ভাসানে যখন বক্স বা ডিজে-র দৌরাত্ম্য নেই, তমলুকে তখন অন্য বারের মতোই শব্দদানবের তাণ্ডব।
পথ দেখিয়েছিল কাঁথি। আসল পরীক্ষা দুর্গাপুজোর ভাসানের আগে টেস্টের ফলাফল চিন্তায় রাখল তমলুককে।
বিশ্বকর্মা পুজোয় এ বার শব্দত্রাস দেখেনি কাঁথি। শহরের সেই সুনাম বজায় থাকল ভাসানের দিনেও। প্রতি বারের ভাসানেই ‘উফার’ লাগানো বক্স এবং ডিজে-র আওয়াজে কেঁপে ওঠে কাঁথি। এ বার বিসর্জন হয়েছে ঢাকের বোলে। সাবেক সংস্কৃতির রেওয়াজ ফিরে আসায় খুশি স্থানীয় মদন দাস, কৌশিক মহাপাত্রেরা। যদিও খুশির হাওয়ার মধ্যেও বেসুর বাজছে সাউন্ড সিস্টেম অপারেটরদের গলায়। অপারেটর খোকন মাইতির বলেন, “পুলিশের এমন ধরপাকড়ের মধ্যে আমরা ঝুঁকি নিয়ে বক্স ভাড়া দিতে চাইছি না।” গত কয়েক দিনে শব্দতাণ্ডব রোখার ব্যাপারে অত্যন্ত তৎপর ছিল পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, কাঁথি ও এগরা মহকুমা মিলিয়ে মোট ১৮টি সেট বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
কাঁথিতে যখন এমন ছবি, তখন শব্দতাণ্ডবে টানা তিন রাত ঘুমোতে পারেনি তমলুক। বাদ যায়নি ‘সাইলেন্ট জোন’ জেলা হাসপাতাল মোড়ও। সেখানেও বিশ্বকর্মা পুজো উপলক্ষে রবিবার থেকে টানা তিন দিন মাইক বাজল তারস্বরে। ছিল না কোনও নজরদারি। যদিও শব্দের কারণেই কয়েক মাস আগে এই এলাকায় সভা ও মিছিল নিষিদ্ধ করার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। স্থানীয়দের দাবি, প্রশাসনের তরফ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে শব্দসীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। সচেতনতামূলক পদযাত্রাও করা হয়েছিল মাস কয়েক আগে। বদলায়নি শব্দতাণ্ডবের ছবিটা। জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “শব্দবিধি ভেঙে বক্স বাজানোর অভিযোগে বেশ কিছু জায়গায় পদক্ষেপ করা হয়েছে। তমলুক শহরের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে।” পদক্ষেপের আশ্বাসও দেন তিনি।
জেলার আর এক শহর হলদিয়ায় দেখা গিয়েছে মিশ্র-ছবি। শহরের কিছু এলাকায় রবিবার থেকেই শব্দতাণ্ডব রুখতে পথে নামে পুলিশ। ১২টি মণ্ডপ থেকে খুলে নেওয়া হয় মাইক। স্থানীয় বাসিন্দা সুজিত করণ, সোনালি চক্রবর্তীরা জানান, অন্য বারের চেয়ে শব্দদাপট এ বার অনেকটাই কম। তবে কিছু এলাকায় স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রবল জোরে ডিজে বাজলেও ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। তবে পেরিয়ে এ বার সব নজর দুর্গাপুজোর দিকে।
সহ-প্রতিবেদক: আরিফ ইকবাল খান