ভঙ্গুর: হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ল পাঁচিল (চিহ্নিত)। নিজস্ব চিত্র
বড়সড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল মেদিনীপুর গ্রামীণের গোলাপিচক। শনিবার সকালে এই এলাকায় নির্মীয়মাণ একটি ফ্ল্যাটের দেওয়াল আচমকাই ভেঙে পড়ে। তখন ফ্ল্যাট চত্বরে ছিলেন শ্রমিকেরা। তবে ঘটনাস্থলে না থাকায় বরাতজোরে তাঁরা রক্ষা পান। প্রত্যক্ষদর্শীরা মানছেন, যে ভাবে দেওয়ালটি ভেঙে পড়েছে তাতে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতেই পারত। স্থানীয় কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান গৌতম দত্ত বলেন, “ওই সময়ে ঘটনাস্থলে কেউ ছিলেন না। তাই বড়সড় বিপত্তি এড়ানো গিয়েছে। না হলে যে কী হত তা ভাবলেই শিউরে উঠছি।”
মেদিনীপুর শহরের অদূরেই গোলাপিচক। এলাকাটি মেদিনীপুর সদর ব্লকের কনকাবতী গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন। পঞ্চায়েতের এক সূত্রে খবর, এখানে দোতলা বাড়ি তৈরির অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। তবে ফ্ল্যাটবাড়িটি তিনতলার হচ্ছিল। ফলে, অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। যদিও নির্মীয়মাণ ফ্ল্যাটটি যাঁর, সেই বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর দাবি, ‘‘বেআইনি কিছু হয়নি। যাবতীয় নিয়ম মেনেই বাড়িটি তৈরি হচ্ছে। আর দেওয়াল ভেঙে পড়া নিয়ে তাঁর বক্তব্য, “এ দিন সকালে একটা ঘটনা ঘটেছে। তবে বড় কিছু নয়। কেউ জখমও হয়নি।’’
স্থানীয়দের একাংশের অভিযোগ, শুধু মেদিনীপুর গ্রামীণের এই এলাকা নয়, অন্যত্রও নিয়ম না মেনে মাথা তুলছে বহুতল। প্রোমোটারদের একাংশের সঙ্গে শাসক দলের কিছু নেতার যোগসাজশেই এই অনিয়ম হচ্ছে। ফলে, বেআইনি ভাবে ফ্ল্যাট বানিয়েও প্রোমোটারদের সমস্যায় পড়তে হচ্ছে না। মেদিনীপুর শহর এবং শহরতলি জুড়েই এই ছবি। নিয়ম ভেঙে পাঁচ-ছ’তলা, কোথাও বা আরও বেশি উঁচু ফ্ল্যাট হচ্ছে। অভিযোগ, অনেক ফ্ল্যাটেরই গুণগত মান যথাযথ নয়। নিম্নমানের সরঞ্জাম দিয়ে তা গড়া হয়। ফলে, এক-দেড় বছর যেতে না-যেতেই পলেস্তারা খসে পড়তে শুরু করে। দেওয়ালে ফাটল ধরে। মানা হয় না সুরক্ষা-বিধিও। গোলাপিচকের ফ্ল্যাটটিও কি বেআইনি ভাবেই হচ্ছিল? উপপ্রধান গৌতমবাবুর জবাব, “দোতলা বাড়ি তৈরির অনুমতি নেওয়া হয়েছিল বলে শুনেছি। অথচ, বাড়িটি তিনতলা হচ্ছিল। বেআইনি কিছু হয়েছে কি না দেখছি।’’